• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ পুড়িয়ে মেরে বিপদে তিন পরিবার


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি আগস্ট ৫, ২০১৭, ০১:২৩ পিএম
সাপ পুড়িয়ে মেরে বিপদে তিন পরিবার

ফাইল ছবি

ঝিনাইদহ: সাপের অভিশাপ লেগেছে, এই বিশ্বাসে পাঁকা বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার তিনটি পরিবার। সদর উপজেলার দক্ষিণ-দূর্গাপুর গ্রামের তিন ভাই গত বুধবার থেকে বাড়ি ভাঙতে শুরু করেন।

২০০ গজ দূরে আরেকটি জমিতে নতুন করে বাড়ি তৈরি করছেন। এরা হচ্ছেন নূর আলী শেখ, আবুল কাশেম শেখ ও আব্দুস সামাদ শেখ।

পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘরে ওঠা একটি সাপ মেরে পুড়িয়ে ছিলেন তারা। এরপর থেকে তাদের পরিবারে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তিন পরিবারের ১৬ সদস্যের মধ্যে ৫ জন বর্তমানে অসুস্থ। এছাড়া নানা ভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। সর্বশেষ তাদের এক মেয়ে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে নানা কথা বলছেন। তার কথার পর এই বাড়িতে আর থাকার উপায় থাকে না। যে কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পাঁকা ঘরগুলোর টিনের চাল খোলার কাজ চলছে। ২৫ শতক জমির উপর তাদের তিন ভাইয়ের বাড়ি। মোট কক্ষ আছে ৬টি। বড় ভাই নূর আলী থাকেন পূর্ব পাশে, মেঝো ভাই আবুল কাশেম থাকেন মাঝে আর ছোট ভাই আব্দুস সামাদ থাকেন পশ্চিম পাশে।

কথা হয় আবুল কাশেম শেখের স্ত্রী আয়েশা খাতুনের সঙ্গে। তিনি জানান, ইতিপূর্বে এক বছর হলো তার স্বামীর বড় ভাই নূর আলীর ঘরে একটি সাপ দেখতে পাওয়া যায়। পরিবারের সকলে মিলে এই সাপ মেরে পুড়িয়ে দেন। তখন তেমন একটা কিছু হয়নি। কিন্তু তিন মাস হলো আবারো ওই ঘর থেকে আরেকটি সাপ মারা হয়। এই সাপটি মারার পর তাদের পরিবারের নানা সমস্যা দেখা দেয়।

বড় ভাই নূর আলীর পুত্র রানা হোসেন জানান, ওই সাপটি মারার ঘটনার পর তার বাবার শরীরে ব্যাথার সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার বড় বোন রেশমা খাতুনের চোখের সমস্যা, তার চাচা আবুল কাশেম ও চাচী আয়েশা খাতুনের শরীরে ব্যাথার সমস্যা ও চাচাতো বোন পিংকীর (১৪) মাথায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। অন্যরা সারাক্ষণ ব্যাথায় কষ্ট পাচ্ছেন, আর পিংকী মাঝে মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। এই অবস্থায় তারা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন।

তিনি আরো জানান, এক সপ্তাহ হলো পিংকী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর যখন তার জ্ঞান ফেরে তখন সে নানা কথা বলতে তাকে। সে বলে ওই সাপটি মারা তাদের ঠিক হয়নি। এই বাড়িতে থাকলে তাদের আরো ক্ষতি হবে। এসব ভেবে তারা বাড়ি ভেঙে নিচ্ছেন।

ছোট ভাই আব্দুস সামাদ জানান, তাদের বাড়িতে বেশ কিছু বিপদ দেখা দিয়েছে। তাদের কয়েকটি গরু গোয়াল ঘরে থাকা অবস্থায় মারা গেছে। এ সব কারণে বাড়ি ভেঙে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

এই অভিশাপ বিশ্বাস করলেন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিপদগুলো নিজেদের চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি তাই বিশ্বাস করছি।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!