• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিধ্বস্তের পূর্বে পাইলট-কন্ট্রোল টাওয়ারে যে কথা হয় (অডিও) 


নিউজ ডেস্ক মার্চ ১২, ২০১৮, ১০:২৫ পিএম
বিধ্বস্তের পূর্বে পাইলট-কন্ট্রোল টাওয়ারে যে কথা হয় (অডিও) 

ঢাকা: নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (টিআইএ) ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির ব্ল্যাকবক্স পাওয়া গিয়েছে। ব্ল্যাক বক্সে বিমানের ভেতরে থাকা পাইলট ও এয়ার কন্ট্রোল টওয়ারের মধ্যে যোগাযোগকৃত সকল তথ্য সংরক্ষণ থাকে।

এছাড়াও পাইলের সর্বশেষ কথা-বার্তাও রেকর্ড হয়। বিমান বিধ্বস্ত বা কোনো কারণে দুর্ঘটনার শিকার হলে এই তথ্য তদন্ত কমিটিকে রহস্য উদঘাটনে সহায়তা করে। সোনালীনিউজের কাছে ইউটিউব থেকে সর্বশেষ পাইলট ও ত্রিভূবন বিমান বন্দরের কেন্ট্রোল টাওয়ারে থাকা কর্মকর্তার সঙ্গে যে কথোপকথন হয় তার একটি অডিও টেপ পাওয়া গিয়েছে।

অডিও টেপটি নেপালের ইংরেজি দৈনিক নেপালি টাইমস পেয়েছে।

বিমানটি অবতরণের আগে ইউএস বাংলা ফ্লাইটের পাইলটের সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের চার মিনিট কথোপকথন হয়। এতে কন্ট্রোল রুমের দেয়া নির্দেশনা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। বিমানবন্দরের রানওয়ে জিরো টু অর্থ্যাৎ ০২ (দক্ষিণের শেষ প্রান্তের) ও রানওয়ে টু-জিরো অর্থ্যা ২০ নিয়েই দেখা দেয় এ দ্বিধা।

বিমানটি যখন অবতরণের অনুমতি চায় তখন অন্য বিমানের নেপালি পাইলটরা বুঝতে পারেন যে এটিসিকে সতর্ক করে দিচ্ছেন ইউএস-বাংলার পাইলট। এমনকি কথাবার্তায় ইউএস-বাংলার পাইলটকে বিচলিত মনে হয়। নেপালি পাইলটরা সে সময় জানান, যে কোনো ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে ইউএস-বাংলার পাইলটকে রাডারের সহায়তা করা উচিত।

অডিও রেকর্ডের শুরুর দিকে শোনা যায়, কন্ট্রোল রুম থেকে বিমানের পাইলটকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, আমি আবারো বলছি, রানওয়ের ২০ এর দিকে অগ্রসর হবেন না। এমনকি তাকে কিছুক্ষণের জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়। 

পরে এটিসি পাইলটের কাছে জানতে চায়, তিনি রানওয়ে ০২ নাকি ২০-তে অবতরণ করতে চান। এবার পাইলট জানান, আমরা ২০ নাম্বার রানওয়েতে অবতরণ করতে চাই। তখন তাকে রানওয়ের শেষ প্রান্তে অবতরণের অনুমতি দেয়া হয়।

পরে পাইলট আবার জানতে চান তিনি রানওয়ের নির্দিষ্ট এলাকায় আছেন কি-না। তখন তাকে না করে দেয়া হয়। এবার তাকে ডান দিকে সরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় এটিসি। পরে পাইলট ইতিবাচক সাড়া দেয়।

এ সময় পাইলট আবার বলেন, রানওয়ে ০২ অবতরণের জন্য ফ্রি (যদিও তিনি রানওয়ে ২০ -এ অবতরণের জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন)। তখন এটিসি থেকে তাকে রানওয়ে ০২- তে অবতরণের অনুমতি দেয়া হয়। একই সময়ে সেনাবাহিনীর একটি বিমান বিমানবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল; এ বিমানও কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে অবতরণের সংকেত চায়। এ সময় এটিসি জানায়, বাংলাদেশি বিমান অবতরণের জন্য রানওয়ে ২০ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

ইউএস-বাংলার পাইলটের সর্বশেষ কথা অস্পষ্ট বোঝা যায়। তিনি বলেন, স্যার, আমরা কি অবতরণ করতে পারি? কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর এটিসির নিয়ন্ত্রক চিৎকার করে বলেন, আমি আবারো বলছি, বাঁক নিন...!

এরপর কিছুক্ষণ পরই চিৎকার উঠে ফায়ার ফায়ার.......এর পর আর সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে টাওয়ারে আগুনের সংকেত আসে। যাতে পরিষ্কার হয় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় অপর একটি বিমানের পাইলট এটিসির কাছে জানতে চায়, রানওয়ে কী বন্ধ রয়েছে? এটিসি তখন নিশ্চিত করে জানায়, রানওয়ে বন্ধ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার (১২ মার্চ) দুপুর ১২টার সময়ে ঢাকা থেকে বিমানটি ৭১ জন যাত্রী নিয়ে আকাশে উড়ে। বিমানের ক্র-সহ ৩৭ জন পুরুষ ও ২৭জন মহিলা ২ শিশু ছিলেন। নেপালের পত্রিকা কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, মোট যাত্রীর মধ্যে ৩৩ জন নেপালী ছিলেন।

বিমানটির আসন ক্ষমতা ৭৮ জন। 

এয়ারলাইন্সে থাকা ৭১ জন যাত্রী ও ক্রুদের মধ্যে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। বিমান ও হাসপাতালে থাকা ব্যক্তিদের সবার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বাকি ২২ জন কাঠমান্ডুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে সর্বশেষ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। 

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!