সংগৃহীত ছবি
দিনাজপুর: দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন গ্রাম দক্ষিণ মেড়াগাঁওয়ে মহা ধুমধামে হয়ে গেল এক অন্যরকম বিয়ে।নাচ-গান, বাদ্য-বাজনা সবকিছুই ছিলো বিয়েতে। নিমন্ত্রণ কার্ড থেকে শুরু করে সহস্রাধিক মানুষের তিন দিন ধরে ভোজনের আয়োজন ছিল।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে অনুষ্ঠিত এ বিয়ের বরের বয়স শতবর্ষ ও কনের বয়স শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই।
বর দক্ষিণ মেড়াগাঁও গ্রামের স্বর্গীয় ভেলগু দেবশর্মার পুত্র বৈদ্যনাথ দেবশর্মা। আর কনে তারই ৯০ বছর আগে বিয়ে করা স্ত্রী পঞ্চবালা দেবশর্মা।
বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রে বর উল্লেখ করেন ‘পরম করুনাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমার বয়স ১০৭ বছর। আমার স্ত্রী শ্রীমতি পঞ্চবালার সহিত প্রায় ৯০ বছর পূর্বে বিবাহ সুসম্পন্ন হয়। আমাদের বিবাহের পঞ্চম পীড়ি (পাঁচ প্রজন্ম) উত্তীর্ণ হওয়ায় ৮ ফাল্গুন রোজ রোববার এক সনাতনী বেদমন্ত্র উচ্চারণে ‘যদিদং হৃদয়ং মম-তদিদং হৃদয়ং তব’ পুনঃবিবাহ মিলনের অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন হইবে। উক্ত পুনঃবিবাহ মিলন ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে আমার নিজ বাসভবনে উপস্থিত থাকার বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। পত্র দ্বারা নিমন্ত্রণ করিলাম। ত্রুটি মার্জনীয়।’
নিমন্ত্রণপত্রে বিয়ের লগ্ন-তিথি, বৌভাতসহ সব অনুষ্ঠানের সময়সূচি উল্লেখ করা হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, পাঁচ শতাধিক কার্ড ছাপিয়ে বিয়ের নিমন্ত্রণ দেয়া হয় আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে।
রোববার রাত ৮টায় বর আসেন গাড়িতে চড়ে। যথারীতি পূজাপার্বণের মাধ্যমে বরকে বরণ করে নিয়ে বসানো হয় বিবাহবাসরে এবং সাজিয়ে-গুছিয়ে তার পাশেই বসানো হয় কনেকে। এরপর ব্রাহ্মণ নিয়ে উচ্চারণ করা হয় সনাতনী বেদমন্ত্র। এভাবেই সনাতনী রীতিতে মালাবদলসহ সবরকম আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় বিয়ে।
বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া বৈদ্যনাথ বলেন, বিয়ের পঞ্চম প্রজন্ম পার হয়েছে। এজন্যই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আবার এ বিয়ে। বংশধরদের মঙ্গলের জন্যই এ বিয়ের আয়োজন বলে জানান তিনি।
কনে পঞ্চবালা দেবশর্মা জানালেন, ছোটবেলা বিয়ে সম্পন্ন হওয়ায় বিয়ে কি- তা তিনি বোঝেননি। কিন্তু এবার এ বিয়েতে বেশ আনন্দ পাচ্ছেন তিনি। আমাদের বংশধররাও যাতে আমাদের মতো দীর্ঘজীবী হয়-এজন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি।
সোনালীনিউজ/আইএ







































