• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২
খোঁজ রাখেনা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর

সাতক্ষীরার সবচেয়ে বড় ছাগলের খামার সালমা আক্তারের


রাহাত রাজা, সাতক্ষীরা আগস্ট ১, ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
সাতক্ষীরার সবচেয়ে বড় ছাগলের খামার সালমা আক্তারের

সাতক্ষীরা: ছোট থাকতে একবেলা খাবার জুটলেও অন্য বেলা উপোস থাকতে হতো, এরই মধ্যে স্বপ্ন দেখেন নিজে কিছু করার। ছোট থেকে ছিলো উদ্যোক্তা হওয়ার তীব্র ইচ্ছে শক্তি, তাই দুইটি ছাগল পালন শুরু করেন তিনি দেখতে দেখতে ছোটখাটো একটি খামার হয়ে যায় তাঁর। সংগ্রামী মানুষটির নাম সালমা আক্তার। সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ি ইউনিয়নের বালিথা গ্রামে নিজের বাড়িতেই বিশাল ছাগলের খামার করেছেন তিনি। সেখানে দুম্বা, ছাগল ও গাড়ল পালন করেন সালমা আক্তার।

সালমা আক্তার জানান, ছোটবেলা থেকেই পশু পাখির প্রতি ভালোলাগা থেকেই ছাগল পালনের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার এবং দারিদ্র বিমোচনে ছাগল পালন ভূমিকা রাখে, তাই বিবাহের পরেও স্বামীর বাড়িতে এসে স্বামীকে সাথে নিয়ে বৃহৎ খামার গড়ে তুলেছেন তিনি।

Caption

বিদেশি জাতের ছাগল বছরে দুইবার বাচ্চা দেয়। একটি ছাগল সর্বোচ্চ ৫টি বাচ্চা দেয়। ছয় মাস বয়সী ছাগল বিক্রি হয় ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা। একটি ছাগল ছয় মাসে খড়, কাঁচা ঘাস, ভুষি খায় প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার।

সালমা আক্তার জানান, বর্তমানে তার খামারে শতাধিক উন্নত জাতের ছাগল রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিরহি,তোতাপুরি,নাগ পুরী বিটল,যমুনা পাড়ি, গুজরি,হরীয়ানা সহ দেশি বিদেশি উন্নত জাতের ছাগল। যার বাজার মূল্য ২০ হাজার থেকে শুরু করে প্রায় ২ লাখ টাকা।

সালমা আক্তারের খামারে দুই জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে যাদের মাসিক আয় দশ হাজার টাকা। খামারে কর্মরত শ্রমিকরা বলেন প্রতিদিন তিন বেলা ছাগলের খাবার ও পানি দিতে হয়। এছাড়া ছাগলকে গোসল করানো ঔষধ খাওয়ানো খড়, কুটা,ভূষি, বিচলি, সবুজ ঘাষ খেতে দিতে হয়।

উন্নত জাতের পাঠা ছাগল পালনে ছালমা আক্তারের বেশ সুনাম রয়েছে তার খামারে বাঘা তোতা পাঠা, মেউতি তোতা পাঠা, বিটল সহ উন্নত জাতের পাঠা ছাগল রয়েছে, যার প্রতিটির বাজার মূল্য লক্ষাধিক টাকা।

Caption

সালমা আক্তারে সাফল্য দেখে প্রতিবেশী নারীরাও ছাগল পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সালমা আক্তার তাঁদের ছাগল পালনের পরামর্শ দেন। ধীরে ধীরে সাতক্ষীরা সদরের অনেক বেকার যুবকও সালমা আক্তারের থেকে ছাগল পালনের পরামর্শ নিয়ে ছোট ছোট ছাগলের খামার তৈরি করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। দীর্ঘ ৩০ বছর ছাগল পালনের অভিজ্ঞতা নিজের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে সালমা আক্তার ছড়িয়ে দিচ্ছেন তার এলাকায় ভূমিকা রেখে চলেছেন গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকাশক্তি ছাগল পালনে।

বর্তমানে সালমা আক্তারের মাসিক আয় ৭০ হাজার থেকে শুরু করে ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু সালমা আক্তারের কিছু আক্ষেপ রয়েছে। তিনি বলেন সাতক্ষীরা জেলা শহরে তার মত বড় ছাগলের খামার আর কারো নেই এরপরেও ৩০ বছরে একটি দিনও জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কোন প্রাণীর চিকিৎসক খামারটি পরিদর্শন করেনি। খামারের ছাগলের কোন অসুখ হলে চিকিৎসার জন্য গ্রামের যে সকল পশু চিকিৎসক ডাকা হয় তারা অনেক সময় ভুল চিকিৎসায় ছাগল মেরে ফেলে তাই জেলা প্রাণিসম্পদ থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে এবং জেলার বড় বড় খামার গুলো যদি প্রাণিসম্পদ অফিসের সহায়তা পায় তাহলে সাতক্ষীরা জেলার বেকার যুবক থেকে শুরু করে হাজারো নারী উদ্যোক্তার ভাগ্য বদলাতে পারে ছাগল পালন।

এমএস

Wordbridge School

সারাদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!