• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই, ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

ব্রেন টিউমারে থেমে গেছে মেঘলার লেখাপড়া, চান বিত্তবানদের সহযোগিতা


পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জুলাই ১, ২০২৫, ০৯:৪৪ পিএম
ব্রেন টিউমারে থেমে গেছে মেঘলার লেখাপড়া, চান বিত্তবানদের সহযোগিতা

ঢাকা: নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম হলেও ইচ্ছে ছিল লেখাপড়া করে বড় হবে মেঘলা রানী বর্মন। বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটাবে চাকরি করে।

তাছাড়া বাবা-মার কতই না স্বপ্ন ছিল তাদের মেয়েকে নিয়ে। কিন্তু ব্রেন টিউমার নামের ঘাতক থামিয়ে দিয়েছে সবার স্বপ্ন।

বলছি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ চন্দ্র বর্মন ও গীতা রানী বর্মন দম্পতির ছোট মেয়ে মেঘলার কথা। সে স্থানীয় ঘাগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। 

বছর কয়েক পূর্বে স্কুলের সহপাঠীর সাথে দুষ্টমির সময় মাথায় আঘাত পায়। তখন থেকে প্রায়ই মাথা ব্যথা করতো। পরে বিভিন্ন ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাতেও কোনো কিছু ধরা পরেনি। 

সর্বশেষ এক মাস পূর্বে আবারো ময়মনসিংহ গিয়ে ডাক্তার দেখান ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানতে পারেব ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। এতে ভেঙে পরেছেন তার পরিবার।

মেঘলার মা গীতা রানী বর্মন কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছোট মেয়ের ব্রেন টিউমার হয়েছে। এক মাস আগে পরীক্ষার মাধ্যমে তা জানতে পারি। অভাবের সংসারে খেয়ে-পরে দিনপার করছি। তার উপর মেয়ের চিকিৎসা করানোর জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। মেয়েটা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বেশি শব্দ শুনলেই মাথা ব্যথা উঠে তার, মাঝেমধ্যে অজ্ঞানও হয়ে যায়। সকলের কাছে সহযোগিতা চাই যেন চিকিৎসা করে আমার মেয়েকে সুস্থ করতে পারি।

মেঘলার বাবা নারায়ন চন্দ্র বর্মন বলেন, আমি মানুষের জমিতে কাজ করি। মাঝেমধ্যে নদী থেকে মাছ ধরে বিক্রি করি। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি কিছুদিন আগে। একটা ছেলে নবম শ্রেণীতে পড়ছে । ছোট মেয়েটা ৫ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করত। ব্রেন টিউমার হওয়ার পর থেকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিছে। আমি বাবা হয়ে তার চিকিৎসা করাবো সেই টাকাও আমাদের কাছে নেই। বিভিন্ন বাজারে গিয়ে মানুষের কাছে সাহায্য চাই কেউ কেউ ২ টাকা ৫ টাকা দেয়, আবার কেউ বিশ্বাস করতেই চায় না। কিন্তু মেয়ের চিকিৎসা করাতে যে লাখ লাখ টাকা লাগবে। একজন বাবা হিসেবে মেয়ের এমন অসুস্থতা দেখে খুবই কষ্ট লাগে, কিন্তু কিছুই করতে পারছি না।

মেঘলা বলেন, আমি স্কুলে গেলে বেশিক্ষণ থাকতে পারিনা, মাথা ব্যাথা করে। কেউ জোরে চেঁচামেচি করলেই  আমার এমন হয় । আমি সুস্থ হয়ে আবারো লেখাপড়া করতে চাই।

প্রতিবেশীরা জানান, মেঘলার বাবা দিন আনে দিন খায়। মেয়ের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে এসে চিকিৎসা সহায়তা করে হয়তো সুস্থ হয়ে আবারো স্কুলে ফিরবে মেঘলা। আবারো সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলার পাশাপাশি লেখাপড়ায় মনযোগী হবে। তাছাড়া তার মা-বাবা খুবই গরিব, অভাবের সংসারে দিন আনে দিন খায়।

ঘাগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামছুল হক মৃধা জানান, মেঘলা আমাদের স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। তার শ্রেণীর রোল ১৬। স্কুলে এসে মাঝেমধ্যে সে মাথা ব্যাথার কথা বলতো আমরা ছুটি দিয়ে দিতাম। কিন্তু এই সমস্যাটা তার দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। পরে আমাদের পরামর্শে তাকে ডাক্তার দেখানো হয়। প্রথম অবস্থায় কোন রোগ ধরে না পড়লেও গত এক মাস পূর্বে তার ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। 

তারপর থেকে সে স্কুলে আসা একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে। তার পরিবার যেহেতু অস্বচ্ছল আমরা শিক্ষকগণ তার জন্য চিকিৎসা ফান্ড সংগ্রহ করবো। পাশাপাশি সমাজের দানশীল ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান করছি, যেন সুচিকিৎসার মাধ্যমে মেঘলা আবারও আমাদের স্কুলে ফিরে আসে।

সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন এই নম্বরে। ০১৪০২৬৬৮৪০৭ (বিকাশ পার্সোনাল)  নারায়ণ চন্দ্র বর্মন। 

এআর

Wordbridge School
Link copied!