কুষ্টিয়া: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুরে ভেসে উঠা সাজিদ আব্দুল্লাহ'র রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এতে পোস্ট মর্টেমের আনুমানিক ৩০ ঘন্টা আগে সাজিদ আব্দুল্লাহ'র মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়। অর্থাৎ আনুমানিক গত বুধবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে সাজিদের মৃত্যু হয়। সোমবার (২১ জুলাই) কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের ডা. হোসেন ইমামও এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, পোস্ট মর্টেমের আনুমানিক ৩০ ঘন্টা আগে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। তবে কিভাবে মারা গেছে ভিসেরা রিপোর্ট প্রকাশ হলে সবকিছু জানা যাবে।
এদিকে এ তথ্য জানার পর সাজিদের মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে আখ্যা দিয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় সাজিদের মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নূন্যতম সময়ের মধ্যে বিচার ও প্রশাসনকে বাদী হয়ে মামলা করাসহ নতুন করে ৮ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
দাবিগুলো হল- মামলা তদন্তের ভার পিবিআইকে দিতে হবে, অধিকতর তদন্তের জন্য বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদারে প্রত্যেকটি হলের প্রতি ফ্লোরে সিসিটিভি ফুটেজ লাগাতে হবে, পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে প্রশাসনকে স্পষ্ট বিবৃতি দিতে হবে ও ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে এবং ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রদানের তাগিদ দিতে হবে। উল্লেখিত দাবিসমূহ না মানলে বিশ্ববিদ্যালয়কে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে ক্যাম্পাসের সকল রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন। ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা অতিসত্বর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা এবং আগামীকাল মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বেলা ১১ টায় ফের আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সাজিদের লাশ উদ্ধারের আগেরদিন বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় ফুটবল মাঠে তাকে খেলতে দেখা যায়। এরপর ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল আলিম তাকে দেখেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
এরপর থেকে তাকে আর কেউ দেখেনি। এসময় তাকে আলিম যে পোশাক পরা অবস্থায় দেখেছিল লাশের গায়েও সেই একই পোশাক পাওয়া যায়। লাশ ভেসে ওঠার পর থেকেই তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনের দাবিতে ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে ওঠে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনের পৃথক তদন্ত কমিটি রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, আমরা সাজিদের মৃত্যুর তদন্তের কাজে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এ রহস্য উদঘাটন হবে। তবে পোস্ট মর্টেমের প্রাথমিক প্রতিবেদনের পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক আটকে আন্দোলন করে। তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি এবং প্রশাসনের সঙ্গে বসার কথা বলেছি কিন্তু শিক্ষার্থীরা কোনো সাড়া দেয়নি।
রুটিন দায়িত্বে থাকা প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তার বাবা একটা মামলা করেছে। পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া বা প্রশাসনকে বাদী হয়ে মামলা করা এই বিষয়ে এখনও পরিকল্পনা করা হয়নি।
এআর







































