• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

মাদারীপুরে নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে ১০ গ্রামের মানুষ 


মাদারীপুর প্রতিনিধি জুলাই ২১, ২০২৫, ১০:১৫ পিএম
মাদারীপুরে নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে ১০ গ্রামের মানুষ 

মাদারীপুর: মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের হোগলপাতিয়া এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ব্যাপক নদীভাঙনের মুখে পড়েছে আশেপাশের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ। ভাঙনের কবলে ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, স্কুল-মসজিদ এবং শত শত হেক্টর আবাদি জমি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই ড্রেজার মেশিন দিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে তোলা হচ্ছে বালু। অথচ এর কোনো বৈধ অনুমতি নেই উত্তোলনকারীদের হাতে। ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব এবং ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়েছে স্থানীয় বসতভিটা ও ফসলি জমি।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, বিষয়টি একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিবাদ করতে গেলে তারা প্রভাবশালী মহলের হুমকি-ধামকির শিকার হচ্ছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, যারা বালু উত্তোলন করছে তারা প্রভাবশালী এবং প্রশাসনের কিছু লোককে ম্যানেজ করে এসব করছে। আমরা প্রতিবাদ করলেই হুমকি আসে।

প্রতিদিন বিকেল হলেই হোগলপাতিয়া সংলগ্ন নদীতীরে দেখা মেলে ৩-৪টি ড্রেজার মেশিন। প্রতিটি মেশিনের সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি করে বাল্কহেড নৌকা এবং ১০-১২ জন লোকের পাহারা। এসব ড্রেজার দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু তুলে তীরবর্তী এলাকায় ফেলে তা ট্রাকে করে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। অথচ কোনো অনুমতি ছাড়াই দিনের পর দিন চলছে এই কার্যক্রম।

চর হোগলপাতিয়া, চর হাওলাদারকান্দি, কান্দিপুরসহ আশেপাশের প্রায় ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের মানুষ বালু উত্তোলনের এই ভয়াবহ প্রভাবের শিকার হচ্ছেন। নদীর কূলে থাকা শত শত পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে অন্যের জমিতে কিংবা রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষক রাজিব মন্ডল বলেন, আমাদের তিন কানি জমি ছিল, তার মধ্যে দুই কানি নদীতে চলে গেছে। এখন যে সামান্য জমিটুকু বাকি আছে, সেটিও ভাঙনের মুখে।

আরেক বাসিন্দা ইলিয়াস আকন বলেন, আগে নদী ছিল অনেক দূরে। এখন ঘরের পাশ দিয়ে পানি বয়ে যাচ্ছে। গবাদি পশু নিয়ে গোসল করতে যেতাম যেখানে, সেখান থেকে আধা মাইল পর্যন্ত নদী চলে এসেছে।

হোগলপাতিয়া গ্রামের কৃষক জলিল বেপারী বলেন, আমি নিজের চোখে দেখেছি- ৮ বার বসতভিটা নদীতে গেছে। এবার যে ভয়াবহভাবে নদী ভাঙছে, তা আগে কখনো দেখিনি। এর পেছনে একমাত্র কারণ ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা।

অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আবুল হাওলাদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া সাবাব বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। যারা এই কাজে জড়িত, তারা প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে সুবিধা নিতে চায়। তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

এআর

Wordbridge School
Link copied!