• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

বরিশালে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে যুবককে কুপিয়ে হত্যা


বরিশাল প্রতিনিধি  আগস্ট ১, ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম
বরিশালে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

বরিশাল: বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুরের বিল্ববাড়ি এলাকায় পারিবারিক বিরোধের জেরে ভয়াবহ ও রোমহর্ষক এক হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন সিকদার লিটু (৪২)।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের ছোট ভাই সুমন সিকদার (৩৫), বোন মুন্নি বেগম (৩৮) এবং বৃদ্ধা মা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা লিটুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে। কুপিয়ে তার একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় এবং শরীরজুড়ে মারাত্মক জখমের চিহ্ন ছিল। পরে লিটুকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে তার বোন মুন্নি, ছোট ভাই সুমন ও বৃদ্ধা মাকেও কুপিয়ে-পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।

নিহতের পরিবার জানায়, ঘটনার শুরু হয় পারিবারিক কলহ থেকে। লিটুর বোন মুন্নি বেগমের স্বামী জাকির হোসেন গাজী গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এই নিয়ে মুন্নি ও তার পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয় এবং উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জামিন পেয়ে মুন্নি ও তার ভাইয়েরা পুলিশের সহায়তায় বাড়ি ফিরলে জাকির ও তার লোকজন বাড়িতে হামলা চালায়।

প্রথমে পুলিশের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে হামলাকারীরা আবার ফিরে এসে বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এরপর লিটন সিকদারকে ঘর থেকে টেনে বের করে কুপিয়ে হত্যা করে। লাশ নেওয়ার সময়ও হামলাকারীরা পুলিশের গাড়ি থামিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয় এবং শেষবারের মতো নির্মমভাবে কুপিয়ে ফেলে যায়।

মুন্নি বেগম জানান, জাকিরের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পরিবারে কলহ শুরু হয়। সালিশি বৈঠকেও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এতে একপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে হামলার পরিকল্পনা করে।

স্থানীয়রা জানান, নিহত লিটু এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারধর ও নারী সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ ছিল। এমনকি কয়েকদিন আগে নিজের ভগ্নিপতিকে গোপনাঙ্গে বিদ্যুৎ শক দেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হলেও তারা কোনো প্রতিরোধ গড়েনি। এমনকি উত্তেজনার সময় এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ঘটনাস্থলে ফিরে আসতে পুলিশের দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ সহকারী পুলিশ কমিশনার (এডিসি - উত্তর) মো. রিয়াদ হোসেন জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ৫ আটক করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রস্তুত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নজরদারিতে রেখেছে।

এআর

Wordbridge School
Link copied!