• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

শিলংদহ-গুড়পিপুলে গ্রামীণ সড়কে ধানের চারা লাগিয়ে গ্রামবাসীর অভিনব প্রতিবাদ


সিরাজগঞ্জ প্রিতিনিধি আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৯:৫৭ পিএম
শিলংদহ-গুড়পিপুলে গ্রামীণ সড়কে ধানের চারা লাগিয়ে গ্রামবাসীর অভিনব প্রতিবাদ

সিরাজগঞ্জ: স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরও সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শিলংদহ-গুড়পিপুল জন গুরুত্বপূর্ণ সোয়া দুই কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক আজও পাঁকা করণ হয়নি। ফলে বছরের ছয় থেকে সাত মাস এলাকার প্রায় ১০ থেকে ১২টি গ্রামে বসবাসরতদের কাঁদা মাটিতে একাকার হয়ে চরম ভোগান্তি নিয়ে বছরের পর বছর ওই সড়কে চলতে হচ্ছে।

পাশাপাশি স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সদস্যসহ নানা শ্রেণির জন প্রতিনিধি সরকারি দপ্তরে বারবার আবেদন নিবেদন করে কাজের কাজকিছুই হয়নি। যে কারণে ভোগান্তি চিরসঙ্গি করে কৃষককে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে, শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে যেতে, মূমুর্ষরোগী, প্রসূতিমা ও শিশুকে বাধ্য হয়ে কষ্ট নিয়ে চলাচল করতে হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (৪ আগস্ট) সড়ক পাঁকা করণ না করার প্রতিবাদে স্থানীয়রা কাঁদা মাটিযুক্ত শিলংদহ-গুড়পিপুল সোয়া দুই কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের শিলংদহ এলাকায় বিক্ষুদ্ধ কৃষকেরা ধানেরচারাগাছলাগিয়ে দিয়েছেন। যা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলার দেশিগ্রাম ইউনিয়নের শিলংদহ-গুড়পিপুল সোয়া দুই কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরও পাঁকাকরণ হয়নি। অথচ ওই সড়কে শিলংদহ, গুড়মা, আড়ংগাইল, ক্ষিরশিন, গুড়পিপুল, দোগাড়িয়াসহ এলাকার প্রায় ১০ থেকে ১২ টি গ্রামের ১৫ থেকে ২০ হাজার বসবাসরত গ্রাম বাসিদের চলাচলের পথ। আবার এ সড়ক দিয়ে শিলংদহ, গুড়মা, ক্ষিরশিন নামের তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায়৩৫০ থেকে ৪০০শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে চলাচল করতে হয়। আরো চলাচল করতে হয় গুড়পিপুল উচ্চ বিদ্যালয়, আড়ংগাইল দাখিল মাদ্রসায় অনন্ত ১০০ থেকে ১৫০শিক্ষার্থীকে। এ পথেই প্রায় ১০ থেকে ১২ টি গ্রামের বসবাসরত কৃষকদের তাদের উৎপাদিত ধান, সরিষা, আলু, ভুট্রোসহ সকল কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য এলাকার চারটি হাট-বাজারে নিয়ে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা।

শিলংদহ গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক আব্দুল হান্নান জানান, গত প্রায় এক মাস হলো বৃষ্টির কারণে শিলংদহ-গুড়পিপুল জন গুরুত্বপূর্ণ সোয়া দুই কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কটিতে এখন হাটু পরিমাণ কাাঁদা মাটি জমে গেছে। তাতে করে কোন যানবহন চলাচল করতে না পারায় এ সড়কে থাকা তিনটি গ্রামের কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধান, সরিষা, আলু, ভুট্রোসহ কোন কৃষি পণ্য বিক্রির হাট বাজারে নিতে পারে নি। এমনকি ধান বিক্রি করতে না পেরে অনেকে বাজার সদাই করতে পারছেন না। পাশাপাশি কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ঝুঁকি নিয়ে চরম দুর্ভোগে অতি কষ্টে যাতায়াত করতে হয়।

শিলংদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাবাসুম, মদিনা পারভীন, সঞ্চিতা শিং সহ অনেকে জানান, শিলংদহ-গুড়পিপুল গ্রামীণ সড়ক পাঁকা করণ হয়নি। তাই কাঁদা-মাটি মেখে আমাদের এ সড়কে চলতে হয় বা স্কুলে যেতে চায় না অনেকে। অথচ উপজেলার অনেক সড়ক পাঁকা করণ হলেও আমাদের দুরবস্থা কারো চোখে পড়ে না। যা দুঃখজনক। 

আমরা দ্রুত এ সড়ক পাঁকা করণের দাবি জানাই। ক্ষিরশিন গ্রামের গৃহিনী সবিতা খাতুন জানান, বিয়ে হয়ে আসার পর থেকে দেখছি বর্ষার মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলা অযোগ্য হয়ে যায়। হালকা বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান কাঁদায় পরিণত হয়। বছরে অধিকাংশ সময় রাস্তাটি কাঁদাযুক্ত থাকে। যার ফলে বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে চরম দুর্ভোগে অতি কষ্টে যাতায়াত করতে হয় ১২টি গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবারের দশ হাজার মানুষের।

শিলংদহ গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার দীর্ঘ পর থেকে এ রাস্তাটি কাঁচা হওয়ায় রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। এতে করে চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হন যাতায়াতকারীরা। এমনকি কেউ মারা গেলে মরদেহ নিয়ে যেতে হয় মাথায় করে।

এ দিকে এলাকার শিক্ষক তাজ আমিন, গ্রাম প্রধান আব্দুল মালেক, হাবিবুর রহমান হাবিবসহ অনেকে দাবী করেন সড়কটি পাঁকা করণের জন্য সংশ্লিট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সদস্যসহ নানা শ্রেণির জন প্রতিনিধি, সরকারি দপ্তরে বারবার আবেদন নিবেদন করে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

দেশিগ্রাম-গুড়পিপুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দ্রনার্থ বসাক বলেন, সড়কটি পাঁকা করণের জন্য যে খরচ হবে তা ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতার বাহিরে। এজন্য আমি তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মহোদয়কে সড়কটি পাঁকা করণের জন্য অনুরোধ করেছি।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক জানান, আগামী গ্রীম্ম মৌসুমে সড়কটি পাঁকা করণে উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

এআর

Wordbridge School
Link copied!