ঢাকা: হাইকোর্টের নির্দেশনা ও জনরোষ বিবেচনায় সেখানে লুট হওয়া সাদা পাথরের কিছু পরিমাণ কুড়িয়ে এনে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা চলছে।
তবে সর্বস্তরের সিলেটবাসী ও প্রকৃতি পরিবেশ সংরক্ষণের সাথে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসা- রাষ্ট্রীয় সম্পদ জঘন্যভাবে খেয়ানতের দায় কার?
আইনবিদরা একবাক্যে বলছেন, দায়ের করা এ সংক্রান্ত মামলাতেই আড়াল করা হয়েছে মূল অপরাধীদের। তবে সাদাপাথরের ঘটনাকে ঘিরে যখন হুলুস্থুল, আর এ ঘটনাকে ঘিরে সমালোচনার শীর্ষে থাকা দুই কর্মকর্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সোমবার।
তারা হলেন- সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ ও কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার। ফেঞ্চুগঞ্জে বদলি করা হয়েছে আজিজুন্নাহারকে।
আইনবিদরা বলছেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ মানেই জনগণের সম্পদ। আর এই সম্পদের সুরক্ষার জন্য স্তরে স্তরে, ধাপে ধাপে দপ্তর অনুযায়ী দায়িত্বশীলরা আছেন। তারা সবাই বহাল তবিয়তে আছেন, তাহলে পাথর থাকবে না কেন?
শত শত বারকিযোগে হাজার হাজার শ্রমিক, শত শত নৌকা-ট্রাক দিয়ে কয়েকশ কোটি টাকার পাথর নিয়ে গেল লুট করে, তাহলে সুরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিতরা কি করছিলেন? আর সিভিল, পুলিশ ছাড়াও খোদ সেনাবাহিনী এখন ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে মাঠে রয়েছে।
এমন সব প্রশ্ন আইনজ্ঞ ছাড়াও সাধারণের মধ্যে। তাদের মতে, যেসব দপ্তর-প্রতিষ্ঠান সাদাপাথরের সুরক্ষার জন্য দায়বদ্ধ সেসব দপ্তর-প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেই উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন এবং লুটপাটে জড়িত থাকা-দায়িত্বহীনতায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
পাথর লুটের ঘটনায় দায়ের করা মামলা তর্জমা করেও হতাশ আইনজ্ঞরা। তারা দাবি করছেন, পাথর লুটের মামলাতেও মূল অপরাধীদের আড়াল করা হয়েছে। এমন দাবি আইনবিদ এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলামের।
তিনি বলেন, এতবড় বিপর্যয়ের দায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসন কোনোভাবেই এড়াতে পারেনা। এই তিন দপ্তর-প্রতিষ্ঠানকে এড়িয়ে করা মামলা তেমন গ্রহণযোগ্য ও নয়।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালত তালিকা করে পাঠানোর কথা- সেই তালিকা কারা, কিভাবে করছে, প্রকৃত অভিযুক্তদের নাম তালিকায় যাচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখা জরুরি।
অপর আইনজ্ঞ শহীদুজ্জামান বলেন, দুই হাজার আসামি আর মিডিয়াকে সাক্ষী করে মামলা হলে কী হবে, সেই মামলায় আইনের দৃষ্টিতে যারা মূল অভিযুক্ত তাদের কৌশলে রেহাই দেওয়া হয়েছে।
তার মতে, ঘটনাস্থলের গ্রামপুলিশ থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ, ইউনিয়ন তহশিল অফিস থেকে এসিল্যান্ডসহ সংশ্লিষ্টরা, ইউএনও থেকে জেলা প্রশাসন তারাও রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরি-লুটের দায় কেউ এড়াতে পারেন না। কারণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষার দায়িত্বে তারা নিয়োজিত এবং এজন্যই তারা বেতন নেন। অভিযুক্তের দ্বিতীয় ধাপে আসবে পাথর চোর ও লুটেরাদের নাম।
তিনি বলেন, মামলায় যেসব ধারার সুপারিশ করা হয়েছে তাতে কৌশলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের আড়াল করা হয়েছে। রেহাই দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে মূল অপরাধীদের।
এআর







































