বরগুনা: আমতলীতে আলোচিত চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসা ছাত্রী তানজিলাকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যা করায় প্রধান অভিযুক্ত হৃদয় খানকে ফাঁসি দিয়েছে নারী ও নির্যাতন আদালতের বিচারক।
একই সঙ্গে অপহরণ করার অপরাধে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন বিচারক। এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত হৃদয় খানের সহযোগী জাহিদুলকে ৫ বছরের সাজা ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগষ্ট) বেলা ২টায় ২০২৪ সালে ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর মামলার রায় প্রদান করেন বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক ও জেলা দায়রা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস।
মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, আমতলী উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের হৃদয় খান। অন্য দন্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন জাহিদুল ইসলাম। রায় প্রদানকালে আসামি হৃদয় আদালতে উপস্থিত ছিল।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান অভিযুক্ত হৃদয় খান ও জাহিদুল খান মাদ্রাসাছাত্রী তানজিলাকে অপহরণ শেষে ধর্ষণ করে। পরে তানজিলার বাবার কাছে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
ওই দাবিকৃত টাকা না পেয়েই অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করেছে। হৃদয় খানের অপহরণের দাবি করা মোবাইল সূত্র ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদেরকে সনাক্ত করে এবং গ্রেপ্তার করে। পুলিশের কাছে আসামিদের স্বীকারোক্তি কালে বলেন, পুঁজাখোলা গ্রামের তোফাজ্জেল খানের মাদরাসায় ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া কন্যা তানজিলাকে ঘটনার দিন সোমবার সকালে বাড়ির সামনে থেকে চাচাতো ভাই হৃদয় খান ও জাহিদুল খান অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরে একটি বাড়িতে রেখে তারা অপহৃতাকে ধর্ষণ করে। ওইদিন রাতেই অপহৃতার বাবা তোফাজ্জেল খানের কাছে হৃদয় খান তার মোবাইল থেকে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বাবা তোফাজ্জেল খান মুক্তিপণ দিতে বিলম্ব করে।
পরে তারা তানজিলাকে হাত-পা বেঁধে গলায় স্কার্ফ পেচিয়ে হত্যা করে। ঘাতকরা হত্যা করেই খ্যান্ত হয়নি তানজিলার মরদেহ পুজাখোলা খালের চরে হোগলপাতার খেতে কাঁদা মাটির মধ্যে লুকিয়ে রাখে। এ ঘটনায় পরদিন মঙ্গলবার তানজিলার বাবা তোফাজ্জেল খান প্রথমে আমতলী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ হৃদয় খানকে আটক করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে অপহরণের দুইদিন পরে তানজিলার বাড়ির সামনে খালের চরে হোগলপাতার খেতের মধ্য থেকে বুধবার দুপুরে তার হাত-পা বাঁধা গলায় স্কাফ পেচানো মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতে তানজিলার বাবা তোফাজ্জেল খান বাদি হয়ে ঘাতক হৃদয় খান এবং জাহিদুল খানসহ আরো অজ্ঞাত ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রায় প্রদান শেষে তানজিলার বাবা তোফাজ্জেল খান বলেন, অপহরণকারী হৃদয় ও জাহিদুলের পায়ে পরে আমার মেয়ের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। কিন্তু ওরা আমার মেয়েকে বাঁচতে দিল না। আমার মেয়েকে নির্মম নির্যাতন শেষে হত্যা করেছে। আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট।
আসামি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ওয়াসিম মতিন বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
এআর







































