ছবি: প্রতিনিধি
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রায় দুই কোটি মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। আশপাশের জেলার পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকেও রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে পা রাখতেই শুরু হয় দুর্ভোগ। চরপাড়া থেকে দিঘারকান্দা বাইপাস পর্যন্ত সড়কজুড়ে থাকে লেগে থাকা যানজট। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা আর প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সগুলোর দখলে বেশির ভাগ রাস্তা।
হাসপাতালের ভেতরে ঢুকেও মিলছে না স্বস্তি। পুরোনো ভবনের জরুরি বিভাগ আর নতুন ভবনের বহির্বিভাগের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা ও মোটা চাকার রিকশা। যেন হাসপাতালের মাঝখানেই গড়ে উঠেছে অটোরিকশা স্ট্যান্ড।
একসময় রোগীবাহী যান ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে না পারলেও এখন অবাধে প্রবেশ করছে সব ধরনের গাড়ি। সংকুচিত জায়গায় রোগী ও স্বজনদের চলাচল কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অথচ এসব চোখের সামনে দেখেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরাও থাকেন দায়িত্ব পালনের চেয়ে সময় কাটানোর অপেক্ষায়।
হাসপাতালে ঢুকলেই বা বের হলেই শোনা যায় অটোরিকশা চালকদের চিৎকার-গাঙ্গিনারপাড়, তাজমহল, টাউনহল, ব্রিজ, মাসকান্দা, বাইপাস। যাত্রী উঠা পর্যন্ত তারা হাসপাতালের ভেতর থেকে নড়েন না। এতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট, রোগী পরিবহনে বাধা পড়ে।
বুকের ব্যথার চিকিৎসা নিতে আসা তারাকান্দার রোগী জয় ঘোষ বলেন, আগে হাসপাতালের পরিবেশ অনেক সুন্দর ছিল। এখন বাহিরের যানবাহন অনায়াসে ভেতরে ঢুকছে। চালকদের বেপরোয়া আচরণে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে। এক রোগ সারাতে এসে নতুন ঝামেলায় জড়াতে হচ্ছে।
ঠিকানা প্রকাশ না করা রোগী মৌসুমী বেগম জানান, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অটোরিকশা দাঁড়িয়ে থাকে আর বাইরের লোকজন ঘুরে বেড়ায়। চুরি-ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় তারা ভেতরেও অনিরাপদ বোধ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটোরিকশা চালক বলেন, ভেতরে ঢুকলে আনসাররা কিছু বলে না। আর বললেও সামান্য টাকা দিলে বিষয়টা ‘ম্যানেজ’ হয়ে যায়। না দিলে গাড়িতে আঘাত করে বের করে দেওয়া হয়।
হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ শফিক উদ্দিন বলেন, ভেতরে যানবাহন অবস্থান করতে না পারে সে জন্য পুলিশ কাজ করছে। নিয়ম ভাঙলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তাঁর জানা নেই, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. জাকিউল ইসলাম জানান, হাসপাতালের ভেতর থেকে অটোরিকশা সরাতে পুলিশ ও আনসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া যেন কোনো যানবাহন হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে না পারে, সে জন্য নিয়মিত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এসএইচ







































