• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

ট্রাইব্যুনালে ইমরানের সাক্ষ্য

‍‍`নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ‍‍` বলার পর বন্ধ হয় চিকিৎসা


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম
‍‍`নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ‍‍` বলার পর বন্ধ হয় চিকিৎসা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৪ আগস্ট) দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও পা হারানো আহত আন্দোলনকারী আবদুল্লাহ আল ইমরান।

জবানবন্দিতে ইমরান বলেন, “গত বছরের ১৯ জুলাই বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় পুলিশের গুলিতে আমি আহত হই। গুলি লাগে বাঁ পায়ে, হাঁটুর নিচে। এরপর আমাকে ভর্তি করা হয় আগারগাঁওয়ের জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল)।”

তিনি জানান, ২৬ বা ২৭ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা সরাসরি তার বিছানার পাশে গিয়ে কথা বলেন। “আমি তাকে ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করি, তিনি বলেন ‘আপা’ বলে ডাকতে। তিনি জানতে চান, আমি কোথায় পড়ি, হলে থাকি কি না, আন্দোলনে কেন অংশ নিয়েছি।”

ইমরান বলেন, শেখ হাসিনা বুঝতে পারেন তিনি একজন আন্দোলনকারী। তিনি জিজ্ঞেস করেন, “পুলিশ তোমাকে গুলি করেছে?” উত্তরে ইমরান বলেন, “হ্যাঁ, সরাসরি গুলি করেছে।” এরপর শেখ হাসিনা অন্য আহতদের সঙ্গেও কথা বলেন।

জবানবন্দিতে ইমরান আরও বলেন, “শেখ হাসিনা হেল্পডেস্কে গিয়ে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ অর্ডার দেন—আমি তা নিজ কানে শুনেছি।” যদিও তখন এ নির্দেশের অর্থ বুঝতে পারেননি বলে জানান তিনি।

পরবর্তীতে তিনি লক্ষ্য করেন, চিকিৎসা বিলম্বিত হচ্ছে, সময়মতো অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে না, ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না, এমনকি তার বাবা চাইলেও তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। “তখনই বুঝি ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’-এর মানে। আমার পা কাটার পর আমাকে কারাগারে পাঠাতে চেয়েছিল,” বলেন তিনি।

এই ঘটনার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দায়ী করেন ইমরান। তিনি বলেন, “গুলিতে একটা যায়, মরে একটা—একটাই যায়”, এই ভিডিও সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং তার ওপর নির্মম নির্যাতনের সাক্ষ্য বহন করে।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ইমরানকে জেরা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা (স্টেট ডিফেন্স)।

এর আগে রোববার এই মামলায় প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মাইক্রোবাসচালক খোকন চন্দ্র বর্মণ। একই দিন মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। তারা শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ চলমান মামলাটি ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার অংশ। প্রায় এক বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে এই মামলার বিচার শুরু হলো।

ওএফ

Wordbridge School
Link copied!