ফাইল ছবি
ঢাকা: আমলাতন্ত্রের অতি হস্তক্ষেপের কারণেই পঙ্গু হয়ে পড়েছে বাপেক্স, অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে পেট্রোবাংলা। কোম্পানিগুলোতে সঠিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে না পারার কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (০১ মে) এনার্জি এন্ড পাওয়ার আয়োজিত কোভিড পরবর্তী তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে এমন অভিমত দিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
বক্তারা বলেছেন, কার্যকরভাবে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য টেকসই নীতিমালা প্রণয়ন ও তার বাস্তায়নের কোনো বিকল্প নেই। সর্বপরি আইওসির বিনিয়োগ আকর্ষণে গ্যাসের দামে ক্যাপিং পদ্ধতির বদলে ফর্মুলা নির্ভর পদ্ধতিতে যেতে হবে। সর্বপরি সাগরের মাল্টি ক্লায়েন্ট ডাটার জন্য অপেক্ষায় না থেকে হাতে থাকা তথ্য উপাত্তের ওপর নির্ভর করে স্থল ও সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে প্রস্তাব আহবান করা উচিত। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর বদরুল ইমাম দাবি করেন, নিজেদের কাজের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গ্যাস খাত নিয়ে বির্তক তৈরি করা হয়। এলএনজি আমদানি করার স্বার্থে গ্যাস নেই এমন বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। উপর থেকে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার কারণেই বাপেক্সের আজকের অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বাপেক্সের আবিষ্কার ভোলা গ্যাস ক্ষেত্র উন্নয়নের কাজ গ্যাজপ্রমকে দিয়ে দেওয়া হবে একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। দেশে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আইওসির বিনিয়োগ আনতে হবে কিন্তু কোনোভাবেই বাপেক্সকে বাদ দিয়ে নয়।
বিপিসির সাবেক চেয়ারম্যান মোকতাদির আলী বলেন, ব্যাপকভিত্তিক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হলে গ্যাসের মজুদ বাড়াতে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে সন্দেহ নেই। কিন্তু অনুসন্ধানের জন্য আজও দেশে একটি সাসটেনেবল নীতি প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি। মনে রাখতে হবে বিনিয়োগকারীরা আসবে লাভের জন্য, সেবা করার জন্য নয়। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে কখনই পিএসসিতে গ্যাসের প্রতিযোগিতামূলক দাম ঘোষণা করা যায়নি। ফলে কখনো কখনো আইওসিরা আসলেও আবার দাম বাড়ানোর ইস্যুতে দেন দরবার করে ফিরে গেছে। পেট্রোবাংলার কাছে যে তথ্য উপাত্ত আছে তা উন্মুক্ত করে আইওসিরদের কাছ থেকে বিনিয়োগ আহ্বান করা উচিত।
বাপেক্সের সাবেক এমডি মুতর্জা আহমেদ ফারুক বলেন, বাপেক্স নিজস্ব সিদ্ধান্তে কোনো কাজ করতে পারে না। বরং জ্বালানি বিভাগ থেকে তাদের পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কাজ করার ক্ষেত্রে তাদের আরও স্বাধীনতা দেওয়া জরুরি। অবশ্য তিনি স্বীকার করেন, দেশে অনুসন্ধান কাজের দায় এককভাবে বাপেক্স সামাল দিতে সক্ষম হবে না। তাই আইওসিদের বিনিয়োগ আনতে হবে। বিশেষ করে স্থলভাগের পশ্চিমাঞ্চল ও গভীর কাঠামোতে অনুসন্ধানের কোনো বিকল্প নেই।
ইঞ্জি. খন্দকার আবদুস সালেক বলেন, নিজস্ব গ্যাসের জোগান বাড়াতে না পারলে কেবল এলএনজি আমদানি জ্বালানি নিরাপত্তা দিতে পারবে না। আর সেটার জন্য আইওসিদের আকর্ষণ করার মতো নীতি হাতে নিতে হবে। আর এটা শুরুর করার জন্য মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভে শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার দরকার নেই, হাতে থাকা ডাটা ব্যবহার করেই তা করা সম্ভব। তবে পিএসসি দলিলে গ্যাসের দামের যে ক্যাপিং করা আছে তা বদলাতে হবে। বরং পিএসসি জন্য একটি প্রাইসিং ফর্মুলা যুক্ত করতে হবে। যার আলোকে অনুসন্ধান শুরুর ৮/১০ বছর পর যখন উৎপাদন শুরু হবে তখন দাম নির্ধারণ করা যাবে। দ্রুত কাজ করতে না পারলে আগামী পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে দেশকে বড় ধরনের গ্যাস সংকটে পড়তে হবে।
সোনালীনিউজ/এমএইচ







































