ছবি প্রতিনিধি
গাজীপুর: জীবনে অর্থনীতি ভাবে স্বাবলম্বী বা প্রতিষ্ঠিত হতে কে না চায়। যুবকদের দেখাদেখি এবার ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে সামাজিক প্লাটফর্ম ইউটিউবে ভিডিও দেখে মিশ্রদেশি মুরগির খামার গড়ে তুলে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন।
ষাটোর্ধ ওই বৃদ্ধের নাম আ. আজিজ। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের বরই বাড়ী এলাকায় বাড়ি তার। বৃদ্ধ হলেও সময় পেলেই দেশ-বিদেশের খবরা-খবর দেখার জন্য মোবাইল ফোনে ইউটিউবের বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখেন। এ ভাবেই কাজের ফাঁকে ভিডিও দেখতে দেখতে মুরগির খামার গড়েন তিনি।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ২০ পিস দেশি মুরগী নিয়ে একটি ছোট্ট খামার গড়ে তুলেন তিনি। ৯০ দিনের মধ্যেই সেই মুরগি ডিম দিতে শুরু করে। আস্তে-আস্তে ২০ পিসের মুরগি থেকে তার এখন ২০০ পিসে ঠেকেছে।
সম্প্রতি সেই ষাটোর্ধ আজিজের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তার বাড়ির বারান্দায় শুধু ডিম আর ডিম। মুখে হাসি নিয়ে সেই ডিম গুলো ভোলে উঠাচ্ছেন। এরই মধ্যে এক ডিমের পাইকার তার কাছে থেকে প্রতি পিস ১৫ টাকা ধরে কিনার জন্য দরদাম করছে। এক পর্যায়ে সোনালী নিউজকে পাইকার ফুরকান মিয়া বলেন, আজিজ এক সময়ে সংসার জীবনে তেমন একটা স্বচ্ছল ছিলেন না। তবে তিনি দেশি মুরগির ছোট্ট একটি খামার গড়ে বৃদ্ধ বয়সে স্থানীয় যুবকদের মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছেন।
মুরগি খামারি আজিজ বলেন, আমি যখন ইউটিউবে ভিডিও দেখে দেশি মুরগীর খামার গড়ে তুলি। তখন এলাকার লোকজন বিভিন্ন ধরনের কটু কথা বলেন। কিন্তু সে সবে পাত্তা দেননি তিনি। তিন মাস পরেই তার খামারের সব মুরগিই ডিম উৎপাদনে চলে আসে। এর পর থেকেই তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
বর্তমানে সব খরচ বাদে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন করেন আজিজ। তিনি আরও বলেন, দেশি মুরগির খামারে তেমন কোন রোগবালাইয়ের ঝুঁকি নেই। এছাড়া এর জন্য বাড়তি খাবার বাজার থেকে কিনতে হবে না। ঘরের মধ্যে থাকা চাল, ধান, ভাত খাওয়ানো হলেই চলে। যুবকরা অল্প পুঁজি নিয়ে এ মুরগির খামার গড়ে স্বাবলম্বী হতে পারবে।
গাজীপুর জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস জানিয়েছে, দেশি মুরগির খামার একটি লাভজনক ব্যবসা। যদি এটি কেউ করেন তাহলে তার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাদের মাধ্যমে আরও নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। আজিজ অদম্য সাহসী লোক তিনি বৃদ্ধ বয়সে এসেও সংসারের স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছে। এটা সমাজের যুবকদের জন্য অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।
গাজীপুর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা একেএম আতাউর রহমান বলেন, বয়স কোন বাঁধা নয়। কেউ ইচ্ছে করলেই নিজের পরিবর্তনের জন্য যে কোন সময়ে যে কোন কিছুর উদ্যোক্তা হয়ে স্বাবলম্বী হতে পারবে। কোন খামারী কোন পরামর্শ চাইলে এ দপ্তরের কর্মকর্তারা সহযোগিতা প্রদান করবে।
ওয়াইএ







































