• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

৩০০’শ বছরের ঐতিহ্যবাহী তাড়াশের দই মেলা


তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম
৩০০’শ বছরের ঐতিহ্যবাহী তাড়াশের দই মেলা

তাড়াশ: ৩০০’শ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে চলনবিল অধুষ্যিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে স্বরস্বতী পূঁজা উপলক্ষ্যে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী দইয়ের মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর দইয়ের এ মেলাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই এলাকায় সাঁজ সাঁজ রব পড়ে গেছে।

মূলতঃ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মেলার বর্তমান স্থল তাড়াশ ঈদগাহ মাঠে নামি দামি ঘোষদের দই আসার মধ্য দইয়ের মেলা শুরু হয়ে থাকে। আর বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হওয়া দিনব্যাপী ওই মুল মেলায় দইয়ের পাশাপাশি ঝুড়ি, মুড়ি, মুড়কি, চিড়া, মোয়া, বাতাসা, কদমা, খেজুর গুড় সহ রসনা বিলাসী খাবার বিকিকিনি হবে।

ঐতিহ্যবাহী চলনবিল অঞ্চলে তাড়াশের দই মেলা নিয়ে রযেছে নানা গল্প কাহিনী এমনটাই জানান, তাড়াশ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রজত ঘোষ। তিনি আরো জানান, জমিদারী আমলে তাড়াশের তৎকালীন জমিদার পরম বৈঞ্চব বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম রশিক রায় মন্দিরের মাঠে দই মেলার প্রচলন করে ছিলেন। এছাড়াও এলাকায় এমনও জনশ্রুতি রয়েছে জমিদার রাজা রায় বাহাদুর নিজেও খুব দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। তাই জমিদার বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই পরিবেশন করতেন। ওই সময় থেকেই জমিদার বাড়ির সম্মুখে রশিক রায় মন্দিরের মাঠে স্বরস্বতী পুঁজা উপলক্ষে তিনি ৩ দিনব্যাপী দই মেলার প্রচলন শুরু করেন। আর সে থেকে প্রতি বছর শীত মৌসুমের স্বরসতী পূজার দিন শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দই মেলার শুরু হয়।

জানা যায়, দইয়ের মেলায় আসা এ অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারণে নামেরও ভিন্নতা রয়েছে। যেমন-ক্ষীরসা দই, শাহী দই, চান্দাইকোনার, শেরপুরের দই, বগুড়ার দই, টক দই, ডায়েবেটিক, শ্রীপুরী দই এ রকম হরেক নামে ও দামের হেরফেরে  শত শত মণ দই বিক্রি হয়। বিশেষ করে বগুড়ার শেরপুর, রায়গঞ্জের চান্দাইকোনা, ঘুড়কা, নাটোর জেলার গুরুদাসপুরের শ্রীপুর, উল্লাপাড়ার ধরইলের দই, পাবনা জেলার চাটমোহরের হান্ডিয়ালের দই, ডায়েবেটিক, তাড়াশের দই প্রচুুর বেচাকেনা হয়। মহাদেব ঘোষ, বিমল ঘোষ, সুকোমল ঘোষ সহ একাধিক ঘোষের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে দুধের দাম, জ্বালানী, শ্রমিক খরচ, দই পাত্রের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দইয়ের দামও কেজিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বেড়েছে। তবে মেলা দিনব্যাপী হলেও চাহিদা থাকার কারণে মেলায় আসা কোন ঘোষের দই অবিক্রিত থাকে না।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক এম আতিকুল ইসলাম বুলবুল বলেন, তৎকালীন সময়ে প্রতি বছর মেলায় আগত সবচেয়ে ভাল সুস্বাদু দই তৈরিকারক ঘোষকে জমিদারের পক্ষ থেকে উপঢৌকন দেওয়ার রেওয়াজও ছিল এমনটিই আমরা জেনে এসেছি। তবে জমিদার আমল থেকে শুরু হওয়া ঐতিহ্যবাহী তাড়াশের দইয়ের মেলা এখনও মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতেই উৎসব আমেজে বসার বাৎসরিক রেওয়াজ এখনও চলছেই।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!