ঢাকা : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে বৈঠক করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র সৌদি আরব। তবে গত কয়েক বছর ধরে ইরান, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও তেলের দাম নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ সামনে এসেছে। ইরানের সঙ্গে সৌদির কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে দেশে গেলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার (০৬ জুন) ভোরে সৌদি যুবরাজের সাথে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা হয়। তাদের খোলামেলা আলোচনায় আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো স্থান পেয়েছে।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে আর্থিক সহযোগিতা, ক্লিন এনার্জি ও প্রযুক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। এছাড়াও সৌদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের অনুরোধ করেছেন শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক। আর নিজেদের বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প চালু, এর বাস্তবায়নে মার্কিন সহযোগিতা ও এ সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিনিময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হয়েছে দেশটি।
আগের দিন সন্ধ্যায় লোহিত সাগর তীরবর্তী শহর জেদ্দায় অবতরণ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদে যোগ দিতে রিয়াদে যাচ্ছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের প্রভাব দিন দিন বেড়ে চলার প্রেক্ষাপটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিচ্ছে। ব্লিংকেন এমন একটা সময়ে সৌদি সফরে এলেন যখন মধ্যপ্রাচ্যে দৃশ্যমান বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটছে।
চলতি বছর মার্চে আঞ্চলিক দুই প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠায় চীন মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্লিংকেনের এই সফরের দুইটি উদ্দেশ্য আছে। এক, তেল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বজায় রাখা। দুই, মধ্যপ্রাচ্যে চীন ও রাশিয়ার প্রভাব কমানো। তাছাড়া তাদের আশা, সৌদি এবং ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্কও এবার ভালো হবে।
ওয়াশিংটনের থিংক ট্যাংক ফাউন্ডেশন অব ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিসের পরামর্শদাতা রিচার্ড গোল্ডবার্গ বলেছেন, ‘ব্লিংকেনের এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো, চীন ও সৌদি আরব যাতে খুব কাছাকাছি না আসে তা নিশ্চিত করা। ব্লিংকেন সৌদিকে বোঝাবার চেষ্টা করবেন, চীন কেন সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে চাইছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকলে সৌদির কী লাভ হবে।’
সোনালীনিউজ/এমটিআই