• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

না খেয়ে ১৪ জনসহ গাজায় আরও ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুলাই ২৯, ২০২৫, ০৯:০৪ এএম
না খেয়ে ১৪ জনসহ গাজায় আরও ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত

ঢাকা : গাজায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ১৪ জনসহ আরও ৮০ ফিলিস্তিনি দখলদার ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন। ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করে আল জাজিরা।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে অপুষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৭ জনে, যার মধ্যে ৮৮ জনই শিশু।

এই মৃত্যুর বেশিরভাগই সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ঘটেছে, যখন খাদ্য সংকট গাজায় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে—ইসরায়েল মানবিক সহায়তা প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করায়।

ইসরায়েল মার্চে গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে, যা মে মাসে আংশিকভাবে তুলে নেওয়া হয়। তবে এরপর থেকে খুব সামান্য পরিমাণ সাহায্যই প্রবেশ করতে পেরেছে, জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলোর ব্যাপক দুর্ভিক্ষের সতর্কতা সত্ত্বেও।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সোমবার বলেছেন, গাজায় তাঁর কর্মীরা যাদের ক্ষুধা কাতর অবস্থায় দেখছেন, তাদেরকে বর্ণনা করেছেন "মৃত নয়, আবার জীবিতও নয়—হাঁটা লাশ" হিসেবে।

জাতিসংঘ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লাজারিনি বলেন, “নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশের ভাষা যথেষ্ট নয় এখনকার বাস্তবতার জন্য।”

“এখনই একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি আরোপ করতে হবে, ক্ষুধার্তদের জন্য অবস্থা পরিবর্তন করতে হবে এবং সব জিম্মিকে মুক্ত করতে হবে… একবার যুদ্ধবিরতি হলে এর বিশাল কর্মীবাহিনীর মাধ্যমে ব্যাপক মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।”

এদিকে সোমবার স্কটল্যান্ড সফরে থাকা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, গাজায় অনেক মানুষ ক্ষুধায় ভুগছে এবং ইসরায়েলের এই পরিস্থিতির জন্য “অনেক দায়িত্ব” রয়েছে।

“বাস্তব ক্ষুধা চলছে,” মন্তব্য করে ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে মতবিরোধ প্রকাশ করেন। নেতানিয়াহু রোববার বলেছিলেন, “গাজায় কোনো ক্ষুধা নেই” এবং তিনি হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন।

তবে পরে এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে নেতানিয়াহু গাজার পরিস্থিতিকে “কঠিন” বলে স্বীকার করেন এবং বলেন, ইসরায়েল গাজায় সাহায্য পৌঁছাতে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করছে।

ট্রাম্প বলেন, “আমরা খাদ্য কেন্দ্র তৈরি করব”—যেখানে কোনো বেড়া বা সীমানা থাকবে না, যাতে সহজে প্রবেশ করা যায়। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলে গাজার জনগণকে খাবার ও স্যানিটেশনসহ আরও মানবিক সহায়তা দেবে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘোষণা দিয়েছে, তারা গাজার কিছু অংশে হামলা স্থগিত করবে এবং সাহায্য প্রবেশের জন্য নতুন করিডোর চালু করবে। এটিকে জাতিসংঘ স্বাগত জানালেও, তাদের মানবিক প্রধান বলেছেন, এই সহায়তার পরিমাণ অনেক বাড়াতে হবে।

দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার তারেক আবু আজজম জানান, “ইসরায়েল যা ‘মানবিক বিরতি’ বলছে, তা আসলে একতরফা সামরিক কার্যক্রম স্থগিতের নাম মাত্র—সাধারণত কয়েক ঘণ্টার জন্য এবং নির্দিষ্ট কিছু এলাকায়।”

গাজার চরম অবস্থার কারণে আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমালোচনা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, ২৩ লাখ গাজাবাসী ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি।

সোমবার গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জন মারা গেছেন ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে। গাজা সিটি’র আল-শিফা হাসপাতালে এক চিকিৎসক আল জাজিরাকে জানান, মোহাম্মদ ইব্রাহিম আদাস নামের এক শিশু অপুষ্টিতে মারা গেছে কারণ তার জন্য কোনো শিশু খাদ্য (বেবি ফর্মুলা) পাওয়া যায়নি।

গাজার সরকার মিডিয়া অফিস জানায়, শিশু খাদ্যের তীব্র ঘাটতির কারণে হাজার হাজার অপুষ্ট শিশু ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে।

পিএস

Wordbridge School
Link copied!