ঢাকা : সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বলেছেন, সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না, যতক্ষণ না একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয় এবং গাজায় যুদ্ধ শেষ হয়।
সোমবার (২৮ জুলাই) মিডলইস্ট মিরর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
সোমবার (২২ জুলাই) জাতিসংঘে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারোরোর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান এই মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনটি একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পর অনুষ্ঠিত হয়, যা ফ্রান্স ও সৌদি আরব যৌথভাবে আয়োজন করে এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের ওপর কেন্দ্রীভূত ছিল।
প্রিন্স ফয়সাল বলেন, “রাজ্যের জন্য স্বীকৃতি (ইসরায়েলকে) খুব দৃঢ়ভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সাথে সম্পর্কিত।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা অবশ্যই আশা করি, আজ যে স্পষ্ট ঐক্যমত্য দেখা গেছে এবং কালও যা দেখা যাবে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি যে গতি দেখা যাচ্ছে, তা সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ সম্পর্কে আলোচনার দরজা খুলে দিতে পারে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা চলাকালীন কোনোভাবেই স্বাভাবিককরণ নিয়ে আলোচনা হতে পারে না।
তিনি বলেন, “আলোচনা তখনই শুরু হতে পারে, যদি গাজার সংঘাত শেষ হয় এবং গাজার মানুষের দুর্ভোগ কমে। কারণ মৃত্যু, দুর্ভোগ ও ধ্বংসের মধ্য দিয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ নিয়ে কোনো আলোচনার অর্থ বা বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।”
তিনি আরও বলেন, “এরপর আমাদের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এবং যখন সেটি অর্জিত হবে, তখন আমরা সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের বিষয়ে কথা বলতে পারি।”
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রিন্স ফয়সাল বলেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সৌদি আরব সেটিকে স্বাগত জানায়।
তিনি বলেন, “এই পদক্ষেপটি ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার বাস্তবায়নের দিকে একটি আন্তরিক আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রতিফলিত করে।”
ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফ্রান্স জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে (সেপ্টেম্বরে) ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে।
এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৯টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই সংখ্যা অক্টোবর ২০২৩ সালে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ক্রমাগত বাড়ছে।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন ফ্রান্স ও সৌদি আরব যৌথভাবে আয়োজন করেছে, শান্তি আলোচনার পুনরুজ্জীবন এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের অগ্রগতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৬০,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণে গাজা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
গত নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়াও গাজায় যুদ্ধের কারণে ইসরায়েল এখন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।
পিএস







































