ঢাকা: ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সাংবাদিক হুসাম আল-মাসরি গাজার নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার (২৫ আগস্ট) হাসপাতালে সরাসরি সম্প্রচার করার সময় এ ঘটনা ঘটে। ‘ডাবল-ট্যাপ’ নামে পরিচিত ওই হামলায় আল-মাসরিসহ অন্তত ২০ জন নিহত ও কয়েক ডজন মানুষ আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথম আঘাতের পরপরই যখন স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক ও উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান, তখন দ্বিতীয় দফা গোলাবর্ষণ চালানো হয়। এতে একসঙ্গে পাঁচ সাংবাদিক প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে রয়টার্সের ক্যামেরাম্যান হুসাম আল-মাসরি, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ফ্রিল্যান্সার মেরিয়াম আবু দাগা, আল জাজিরার ক্যামেরাম্যান মোহাম্মদ সালামা, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক মোয়াজ আবু তাহা ও মিডল ইস্ট আইয়ের সাংবাদিক আহমেদ আবু আজিজ। এ ছাড়া আলাদা এক ঘটনায় হামসান দুহান নামের আরেক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
৪৯ বছর বয়সী হুসাম আল-মাসরি ছিলেন অভিজ্ঞ ক্যামেরাপার্সন। ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও সাহসী কাজ ও ইতিবাচক মনোভাবের কারণে তিনি সহকর্মীদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয় ছিলেন। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি নিজেও একটি তাঁবুতে বসবাস করতেন এবং অসুস্থ স্ত্রী ও পরিবারের জন্য খাবার জোগাড়ে সংগ্রাম করতেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই হামলা সরাসরি সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে চালানো হয়নি; বরং হামাসের নজরদারি ক্যামেরা ধ্বংসের জন্য আঘাত হানা হয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো ‘ডাবল-ট্যাপ’ কৌশলকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে। জাতিসংঘও ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা সংগঠনগুলো বলছে, চলমান যুদ্ধে গাজায় ইতিমধ্যে দুই শতাধিক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, যা সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক ভয়াবহ পরিসংখ্যান। হুসাম আল-মাসরির মৃত্যু গাজার সাংবাদিক সমাজে গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছে।
ইউআর







































