ছবি: প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গা–ঝিনাইদহ সড়কের দুই ধারের ফুটপাতে লাগানো সপ্তপর্ণা বা ছাতিম গাছের ফুল এখন পথচারীদের মন কেড়ে নিচ্ছে। হেমন্তের আগমনে ঘ্রাণের তীব্রতা বেড়ে গেছে। যদিও গাছগুলোর নিয়মিত যত্ন নেই, তবু সড়কের বাতাসে ছাতিম ফুলের সুবাস ভরেছে পথ ও আশপাশের বাসাবাড়িতে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রাচীন সময়ে ছোট পরিসরে ছাতিম গাছ দেখা যেত অন্য শহরগুলোতে। কিন্তু এই সড়কে ফুটপাতে সারি সারি গাছ লাগানো হওয়ায় সৌরভের তীব্রতা বাড়ছে। পথচারীরা সন্ধ্যার পর গন্ধের মোহে মুগ্ধ হন। স্থানীয়রা বলেন, রাতের নৈশভ্রমণে ছাতিমের ঘ্রাণ এক অন্য অভিজ্ঞতা এনে দেয়।
সাজ্জাদ আলী, যিনি চুয়াডাঙ্গা থেকে ঝিনাইদহে রোগী নিয়ে এসেছিলেন, বলেন, “চারপাশের গাছপালার সৌরভ মনকে প্রশান্ত করে। সন্ধ্যার পর এই ঘ্রাণে অশান্ত মনও শান্ত হয়ে যায়।”
ছাতিম গাছ অ্যাপোসাইনেসি বর্গের অন্তর্ভুক্ত। এর আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। ছাতিমের মূলাবর্তে সাতটি পাতা একসঙ্গে থাকে, তাই সংস্কৃতিতে একে সপ্তপর্ণ বা সপ্তপর্ণা বলা হয়। গাছটি ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়, বহু শাখাসহ। শাখার শীর্ষে সবুজ মিশ্রিত সাদা ছোট ফুল থোকায় থোকায় ফোটে। ফল ৩০–৬০ সেন্টিমিটার লম্বা, সাধারণত দুটি করে ঝুলে। বীজ লম্বাটে ডিম্বাকার এবং প্রান্তে চুল থাকে। গাছের দুধের মতো কষ্ঠযুক্ত দ्रব্য রয়েছে, যা ঔষধি গুণসম্পন্ন।
সড়কের বিভিন্ন স্থানে যেমন জীবননগর উপজেলা গেট থেকে সিঅ্যান্ডবি মোড় পর্যন্ত এবং চুয়াডাঙ্গা থেকে ঝিনাইদহ অভিমুখে ফুটপাতে ছাতিম গাছ লাগানো হয়েছে। বিশেষ করে রেলগেট থেকে সিঅ্যান্ডবি মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে গাছগুলো ফুলে নুয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত বছরও সড়কের ফুটপাতে ছাতিমের সুবাস ছড়িয়েছে। তবে এ বছর ফুলের সমৃদ্ধি বেড়ে ঘ্রাণ আরও তীব্র। সড়কের সৌরভ এখন শুধু রাস্তা নয়, আশপাশের ঘরেও পৌঁছেছে। প্রকৃতির এই মনমাতানো দৃশ্য ও ঘ্রাণে হেমন্তের সন্ধ্যা হয়ে উঠছে পথচারীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
এসএইচ







































