• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে হবে পর্যটন প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২৫, ২০২৩, ০৯:০১ পিএম
কক্সবাজারে হবে পর্যটন প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র

ফাইল ছবি

ঢাকা: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। এই দীর্ঘতম সমূদ্রসৈকতের টানে দেশের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকরাও ছুটে আসছেন কক্সবাজারে।  কিন্তু প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং সুযোগ সুবিধা না থাকায় অনেক পর্যটক অতি উৎসাহ নিয়ে কক্সবাজারে আসলেও ফিরে যাচ্ছেন হতাশ হয়ে। ফলে ‘ভারতের গোয়া সৈকত, থাইল্যান্ডের পাতায়া সৈকতের মত পর্যটক টানতে পারছেনা এই কক্সবাজার। 
এমন পরিস্থিতিতে কক্সবাজারে পর্যটন প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যেগ নিয়েছে সরকার। 

গত ২৪-২৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কক্সাবাজারের জেলা প্রশাসকের প্রস্তাব আমলে নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউসের সংখ্যা ৫১৬টি। যার মধ্যে রয়েছে ১০টিরও বেশি তারকা মানের হোটেল। আর এসব হোটেল মোটেলে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষের। কিন্তু পর্যটন পেশায় প্রত্যাশা অনুযায়ী অংশগ্রহণ নেই পর্যটন নগরীর মানুষের। জেলার যুব সমাজ এখনো পর্যটনের সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য নিজেদের তৈরি করতে পারেনি।

পাশাপাশি তাদের মানসিক বিকাশও পর্যটন সংশ্লিষ্ট নয়। এজন্য স্থানীয় বাসিন্দারা পর্যটন প্রশিক্ষণের দাবী জানিয়ে আসছিলেন।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম কার্য অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রি শাহাব উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাহবুব আলী বলেন, প্রত্যেক জেলাতেই পর্যটক আকৃষ্ট করার মতো দর্শনীয় স্থান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রত্নতাত্ত্বিক পুরাকীর্তি, ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এগুলো তুলে ধরা, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনে স্থানীয় বেসরকারি উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীগণকে সাথে নিয়ে কাজ করতে হবে। তিনি একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে পর্যটনের জন্য স্বতন্ত্রভাবে দায়িত্ব প্রদানের প্রস্তাব করেন। 

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, শুধুমাত্র শহরকেন্দ্রিক পর্যটক নয় বরং সাধারণ মানুষের কাছেও পর্যটনকে জনপ্রিয় করা এবং সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে জিডিপিতে পর্যটনের অবদান শতকরা ৪ ভাগ থেকে ১০ ভাগের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া সম্ভব। 

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের নান্দনিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বিশ্বের দরবারে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ডের মতো তুলে ধরার স্বপ্ন দেখতেন। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সেই স্বপ্নকে সামনে নিয়ে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছে। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও জেলা প্রশাসনের সুচিন্তিত মতামত ও অগ্রণী ভূমিকা প্রত্যাশা করেন।

সম্মেলনে জেলা প্রশাসকদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। 
সিদ্ধান্তগুলো হলো, পনের শতকের ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট এর সকল মসজিদ সংস্কার করে খানজাহান আলী (র:) খলিফাতাবাদ অঞ্চলকে বিশেষ পর্যটন সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা সংক্রান্ত প্রস্তাবটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সেন্টমাটিন দ্বীপের যথাযথ সংরক্ষণ ও পর্যটন বিকাশে সমন্বিত পর্যটন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। হাওড় এলাকায় বর্ষাকালে পর্যটকদের ভ্রমণকালীন বিশ্রামাগার/রেস্ট হাউস ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের উদ্যেগ গ্রহণ করতে হবে।
পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার বাংলাবন্ধায় পর্যটকদের রাত্রিযাপনের সুবিধার্থে পর্যটন মোটেল এবং বিনোদন কেন্দ্র/রিসোর্ট স্থাপনের উদ্যেগ নিতে হবে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় পর্যটক আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে। নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা ও আলীকদম উপজেলার উপযুক্ত স্থানে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের আওতাধীন পর্যটন মোটেল নির্মাণের উদ্যেগ গ্রহণ করতে হবে। কক্সবাজার জেলায় একটি পর্যটন প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যেগ গ্রহণ করতে হবে।

সোনালীনিউজ/এসআই/আইএ

Wordbridge School
Link copied!