• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

৬০ শতাংশ সরকারি কর্মচারীর পদবি পরিবর্তন ও বেতন গ্রেড উন্নতির দাবি


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৯, ২০২৩, ০৩:১৩ পিএম
৬০ শতাংশ সরকারি কর্মচারীর পদবি পরিবর্তন ও বেতন গ্রেড উন্নতির দাবি

ঢাকা: প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পদের জব ড্রেসক্রিপশন বিবেচনায় ৬০ শতাংশ পদের পদবি পরিবর্তন করে সহকারী সচিব (নন-ক্যাডার) করা এবং পদটিকে ৯ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।

সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এ আবেদনে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। 

এতে বলা হয়েছে, ৬০ শতাংশ পদের বেশীরভাগের মূল বেতন বর্তমানে ২২ হাজার টাকার বেশী বিধায় এতে সরকারের আর্থিক সংশ্লেষ হবে না।

পদবি পরিবর্তন ও বেতনস্কেল উন্নীতকরণ শিরোণামের আবেদনে বলা হয়েছে, সবিনয় নিবেদন এই যে, মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহে বিদ্যমান সহকারী সচিব/সিনিয়র সহকারী সচিবের একতৃতীয়াংশ পদ এবং আনুপাতিক হারে উপসচিবের পদ নন-ক্যাডারদের জন্য সংরক্ষিত। এ সকল নন-ক্যাডার পদসমূহ পর্যায়ক্রমে (প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা ব্যক্তিগত কর্মকর্তা > সহকারী সচিব > সিনিয়র সহকারী সচিব > উপসচিব) পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে। এছাড়া, অন্যান্য পদসমূহ সরাসরি এবং পর্যায়ক্রমে (অফিস সহায়ক > অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক বা ডাটা এন্ট্রি অপারেটর বা সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর বা কম্পিউটার অপারেটর > প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা ব্যক্তিগত কর্মকর্তা) পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে। 

মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহে বর্তমানে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তার প্রায় ৩ হাজার পদ রয়েছে। এ ৩ হাজার পদধারী মাত্র ২৬৭টি সহকারী সচিব পদে, পরবর্তী সময়ে ৭২টি সিনিয়র সহকারী সচিব পদে এবং সবশেষে মাত্র ৯ টি উপসচিব পদে পদোন্নতি পাচ্ছেন। অর্থাৎ ২০/২২ বছর চাকুরি করার পর মাত্র দশ ভাগের এক ভাগ ভাগ্যবান কর্মকর্তা কোন একটা পদোন্নতি পাচ্ছেন এবং অবশিষ্ট নয় ভাগ হতভাগ্য কর্মকর্তাকে একই পদে সারাজীবন চাকুরি করে অবসরে যেতে হচ্ছে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে একই চেইনভুক্ত বিধায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পদের নিম্নপদধারী প্রতিটি পদের অবস্থা একই রকম বা কোন কোন ক্ষেত্রে আরও শোচনীয়। 

মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহে কর্মরত বর্ণিত বিশাল নন-ক্যাডার জনবল চাকুরি জীবনের এ রকম অমানবিক অবস্থায় আর্থিক, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ কারণে এ বিশাল জনবল হতাশায় ভুগছেন, হারাচ্ছেন কর্মস্পৃহা। 

প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তাগণ প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। সচিব পর্যায় হতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পর্যায় পর্যন্ত কর্মকর্তাগণের জব ডেসক্রিপশনের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত পুস্তিকাটি এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য (সংলাপ- ক)। ১৪ (চৌদ্দ) পৃষ্ঠার এ পুস্তিকাটির ০৬ (ছয়) পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের জব ডেসক্রিপশন। 

উল্লেখ্য, বি.সি.এস. পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে পদ স্বল্পতার কারণে যাদের ক্যাডার পদে সুপারিশ করা হয়নি এমন প্রার্থীদের বি.পি.এস.সি. কর্তৃক বাংলাদেশ সচিবালয়ের ও জাতীয় সংসদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পদে সুপারিশ করা হয়ে থাকে। এ থেকেও প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পদের কাজের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। 

বর্ণিত জব ডেসক্রিপশন ও পদের গুরুত্ব কোনক্রমেই মাঠ প্রশাসনের বা সচিবালয়ের বাইরের কোন অফিসের কাজের সাথে মিল/তুলনীয় নয়। মাঠ প্রশাসনের নিম্নগ্রেডের পদধারীদের পদবি সম্প্রতি প্রশাসনিক কর্মকর্তা করা হয়েছে এবং বেতনগ্ৰেড উন্নীত করা হয়েছে। আবার, অন্যান্য অফিসের অনুরূপ অনেক পদধারীদের পদমর্যাদা ইতোমধ্যে ৯ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এ কারণে সৃষ্ট অসামঞ্জস্যতা ও অমর্যাদাকর অবস্থা থেকে উত্তরণ আবশ্যক। 

সচিবালয়ের কাজ যেমন ভিন্ন, মাঠ প্রশাসন বা অন্যান্য অফিসের কাজের সাথে মিল/তুলনীয় নয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদবিও ভিন্ন হওয়া আবশ্যক, যার সাথে মাঠ প্রশাসন বা অন্য কোন অফিসের মিল/তুলনা হবে না। ঠিক তেমনি সচিবালয়ের উদাহরণস্বরূপ কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও মাঠ পর্যায়ের অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদবি এক নয়।
 
প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পদের জব ড্রেসক্রিপশন বিবেচনায় ৬০ ভাগ পদের পদবি পরিবর্তন করে 'সহকারী সচিব (নন-ক্যাডার)’ করা এবং পদটিকে ৯ম গ্রেডে উন্নীত করা প্রয়োজন। এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বেশীরভাগের মূল বেতন বর্তমানে ২২,০০০/- (বাইশ হাজার টাকা)-র বেশী বিধায় এতে সরকারের আর্থিক সংশ্লেষ হবে না  বললেই চলে। 

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!