ঢাকা: সরকারি চাকরিজীবীদের বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল, অন্তর্বর্তীকালীন মহার্ঘ ভাতা প্রদান, টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধিসহ ৭ দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ।
শুক্রবার (১৮ এপ্রির) দিনব্যাপী কর্মসূচি নির্ধারণে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক মোঃ ওয়ারেছ আলী। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভিন্ন দপ্তর অধিদপ্তরের কর্মচারী সংগঠনের নির্বাচিত সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিনিধিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালে পে-স্কেল ইতোমধ্যে ১০ বছর অতিক্রান্ত করেছে অথচ সরকার এখন পর্যন্ত কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না, দীর্ঘ ছয়/সাত বছর ধরে আন্দোলনের পরেও সরকারের এ বিষয়ে কোন কর্ণপাত না করায় উচ্চমূল্যের এই বাজারে কর্মচারীদের মানবেতর জীবন ধারণ করতে হচ্ছে। এছাড়া সচিবালায় ও সচিবালয়ের বাইরের কর্মচারীদের মধ্যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বৈষম্য মূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, অতি দ্রুত সরকারি কর্মচারীদের জন্য বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল দিতে হবে, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে, সকল কর্মচারীদের ২০১৫ সালের হরণকৃত টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড ফেরত দিতে হবে, এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে, এছাড়া কর্মচারী অঙ্গনে যে সকল বৈষম্য আছে তা দূর করতে হবে।
কর্মচারীদের উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে গৃহীত মতামতের প্রেক্ষিতে সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান দাবি আদায়ের জন্য আগামীর কর্মসূচি প্রস্তাব করেন এবং চূড়ান্তভাবে সকলে মতামত দিলে মুখ্যসমন্বয়ক মোঃ ওয়ারেছ আলী নিম্নলিখিত কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচি:
১. আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৭ দফা দাবির স্বপক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গণসংযোগ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে;
২. আগামী ১ মে সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কর্মচারী গণজমায়েত করে সেখান থেকে “বৈষম্যমুক্ত কর্মচারী অঙ্গন চাই, আমরা আমাদের মৌলিক অধিকার চাই” এই শিরোনামে একটি র্যালি জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে ৭ দফা দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে;
৩. ৪ মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত সকল সরকারি/আধা সরকারি/ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সামনে ৭ দফা দাবি সম্বলিত ব্যানার নিয়ে সকাল ১১ টায় সুবিধা জনক সময়ে ৩০ মিনিটের অবস্থান কর্মসূচি পালন, আলোচনা সভা করা হবে, একই সাথে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে সাত দফা দাবি সংবলিত স্মারক লিপি প্রদান করা হবে;
৪. ১১ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত সকল জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে, সেইসাথে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করা হবে;
৫. উক্ত কর্মসূচি চলাকালীন সরকার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আগামী ১৬ মে রোজ শুক্রবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে সরকারি কর্মচারীদের ৭ দফা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি করা হবে।
মুখ্য সমন্বয়ক সরকারের কাছে দাবিসমূহ মেনে নেওয়ার জন্য আবেদন জানান এবং বলেন, আমরা গত ৬/৭ বছর ধরে এমনকি ৫ আগস্ট এর পর থেকেও নিয়মতান্ত্রিকভাবে সকল কর্মসূচি পালন করে আসছি কিন্তু সরকার আমাদের বিষয় আমলে নিচ্ছেন না। নির্ধারিত কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় না হলে এর প্রেক্ষিতে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য এই সরকারই দায়ী থাকবে।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন মোঃ সালজার রহমান, খায়ের আহমেদ মজুমদার, মোঃ সেলিম মিয়া, মোঃ জিয়াউল হক, মোঃ নাসির উদ্দিন, মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, মোঃ রফিকুল ইসলাম মামুন, মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, মোঃ তারিকুল ইসলাম, মোঃ আরিফুল ইসলাম, খন্দকার মহিউদ্দিন, মোঃ মাহবুব তালুকদার, মোঃ সুমন মিয়া, আলমগীর হোসেন, খাদিজা খানম, মৌসুমি প্রধান, আঃ মালেক, আশফাকুল আশেকীন, মনির হোসেন, তারেক মাহমুদ, মোঃ শাহআলম, মোঃ শাজাহান, মোঃ পায়েল, রাসেল মিয়া এবং বিভিন্ন দপ্তরের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকসহ অসংখ্য নেতা কর্মী।
আইএ