• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

আল জাজিরার অনুসন্ধান

জুলাইয়ে ছাত্রদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার নির্দেশ দিয়েছিল হাসিনা


নিজস্ব প্রতিবেদক:  জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৯:০৫ এএম
জুলাইয়ে ছাত্রদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার নির্দেশ দিয়েছিল হাসিনা

ঢাকা : আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট ‘হাসিনা-জুলাইয়ের ৩৬ দিন’ শীর্ষক একটি অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে প্রাণঘাতী হামলা চালানোর প্রমাণ প্রকাশ করেছে।

তিন সপ্তাহব্যাপী রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভে দেড় হাজার মানুষ নিহত হয়, পঁচিশ হাজারের বেশি আহত হয় এবং শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় ত্রিশ লক্ষ রাউন্ড গুলি চালায়।

এই ফোনালাপগুলো রেকর্ড করে শেখ হাসিনার নিজের গোয়েন্দা সংস্থা—একটি নির্মম নেটওয়ার্ক যা তাকে বাংলাদেশের ওপর লৌহ মুষ্টিতে শাসন করতে সাহায্য করেছিল। আল জাজিরার এই অনুসন্ধানে উন্মোচিত হয়েছে কীভাবে এই গোয়েন্দারাই এখন ‘পদ্ধতিগত নৃশংসতা’র প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।

একটি রেকর্ডিংয়ে,২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনাকে ঢাকার দক্ষিণের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে বলতে শোনা যায়:

‘আমার নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছে। আমি একেবারে ওপেন অর্ডার দিয়ে দিয়েছি। এখন ওরা মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করবে, যেখানেই পাবে সেখানেই গুলি করবে… এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আমি এতদিন ধরে থামিয়ে রেখেছিলাম… আমি ছাত্রদের নিরাপত্তার কথা ভাবছিলাম।’

আরেকটি রেকর্ডিংয়ে দেখা যায়, তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে আন্দোলন দমন করার কথা বলছেন: ‘…যেখানে কোনো জটলা দেখছে, ওপর থেকে—এখন ওপর থেকেই হচ্ছে—কিছু জায়গায় শুরু হয়ে গেছে। শুরু হয়ে গেছে। কিছু লোক সরে গেছে।’

প্রোগ্রামটিতে এক চিকিৎসক নিশ্চিত করেন যে অনেক আন্দোলনকারী হেলিকপ্টার থেকে গুলিতে নিহত ও আহত হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে আরও প্রকাশ পায়, আওয়ামী লীগ সরকার কীভাবে ছাত্র আবু সাইয়েদের পুলিশের হাতে মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হুমকি ও ঘুষের আশ্রয় নিয়েছিল; যার মৃত্যু দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল।

গোপন কল রেকর্ডিংয়ে প্রকাশ পায়, শেখ হাসিনার সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র সালমান এফ রহমান কীভাবে আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সংগ্রহের চেষ্টা করেন। রিপোর্টটি পাঁচবার পরিবর্তন করা হয়, যাতে গুলির কথা পুরোপুরি মুছে ফেলা হয়। এবং কীভাবে সাঈদের পরিবার, জীবন নিয়ে আশঙ্কায়, শেখ হাসিনার সঙ্গে রাজস্ব টেলিভিশনে সাক্ষাৎ করতে বাধ্য হয়।

আল জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিটের হাতে আসা ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে দেখা যায়, কীভাবে শেখ হাসিনার সরকার ‘রক্তাক্ত সহিংসতার’ ছবি বিশ্বের সামনে আসা ঠেকাতে ইন্টারনেট বন্ধ করার কৌশল নিয়েছিল।

আল জাজিরাকে দেয়া এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের মুখপাত্র বলেন, শেখ হাসিনা কখনও “মরণঘাতী অস্ত্র” শব্দটি ব্যবহার করেননি এবং তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে মারাত্মক বলপ্রয়োগের কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দেননি। তারা ১৮ জুলাই ২০২৪ সালের রেকর্ডিংয়ের প্রামাণ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

তারা আরও জানায়, আবু সাঈদের পরিবার যদি ভীত বা আতঙ্কিত হয়ে থাকে, তবে তারা দুঃখিত; তবে সাবেক সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য দুর্ব্যবহারের তদন্তে প্রতিশ্রুতি ছিল আন্তরিক।

তারা এটিও বলে, শেখ হাসিনার বিশ্বাস ছিল, ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বিক্ষোভকারীদের সৃষ্ট ক্ষতির কারণে।

পিএস

Wordbridge School
Link copied!