• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

কবে কাণ্ডজ্ঞানহীন রাজনীতি থেকে মুক্ত হবে রাজধানী


মো. পলাশ সেপাই আগস্ট ৩, ২০২৫, ০৫:১৭ পিএম
কবে কাণ্ডজ্ঞানহীন রাজনীতি থেকে মুক্ত হবে রাজধানী

ঢাকা: রাজনীতি গড়ে উঠেছে সাধারণ মানুষকে কেন্দ্র করে। সাধারণ মানুষ যাতে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারেন, সেজন্যই যে কোনো দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রচলন। কিন্তু আমাদের দেশেও এর ব্যতিক্রম নয়।

আমাদের দেশে যেমন ছোট, তেমন ছোট রাজধানী শহর। এই ছোট রাজধানী শহরে ১ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের বসবাস। রাজধানীতে মূল মূল কয়েকটি পয়েন্ট রয়েছে। মিরপুর, বনানী, ফার্মগেট, সাইন্সল্যাব, শাহবাগ, পল্টন, মতিঝিল। এরকম আরো বেশ কয়েকটি পয়েন্ট রয়েছে। যা রাজধানীবাসীর যাতায়াতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আমরা বিগত ১৫ বছর ধরে দেখেছি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর থেকে বের হলেই রাস্তাগুলো আটকে দেওয়া হতো। শুধু বের হলেই নয়, ঘর থেকে বের হওয়ার প্রায় ঘণ্টা খানেক আগ থেকে তার গন্তব্যে যাওয়ার রাস্তাগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা হতো। এতে সাধারণ জনগণকে রাস্তার একপাশ থেকে অন্য পাশে যেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। 

সাধারণ জনগণ শুধু অপেক্ষাই করেনি। যতক্ষণ না তারা রাস্তা পার হতে পারেনি ততক্ষণ বিভিন্ন ধরণের গালাগালসহ অজস্র বিশ্রি ভাষায় ব্যবহার করতেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে। হয়তো রাস্তা পার হতে অপেক্ষায় থাকে সেইসব মানুষের আক্ষেপ আর দীর্ঘশ্বাস হাসিনার বিদায়কে অনেকটা সহজ করে দিয়েছে।

শুধু হাসিনার রাস্তা আটকানো নয়। হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন তার দলের বিভিন্ন প্রোগ্রাম প্রায় প্রতিদিন রাজধানীবাসীকে পীড়া দিয়েছে। এমন কোনো দিন ছিল না যে দিন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ বা তার দলের অন্যকোনো সহযোগী সংগঠনের প্রোগ্রাম। এতে করে প্রতিদিনই রাজধানীবাসীকে তীব্র যানজট বা গাড়ি না পাওয়ার দূর্বিসহ দুর্দশা পোহাতে হয়েছে। বাসে চলাচলকারীদেরকে হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষোধাগার করতে দেখা গেছে।

দীর্ঘ ১৬ বছর পর ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী গণআন্দোলনের মুখে পালাতে বাধ্য হয়েছে হাসিনা। শুধু হাসিনা নয় পালাতে হয়েছে স্বৈরাচার হাসিনার প্রধান প্রধান সহযোগীদের। কিন্তু রাজধানী থেকে পালাতে পারেনি রাস্তা আটকিয়ে রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশগুলো।

এই যেমন রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগ দখল করে সমাবেশ করছে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্র দল আর জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। এই দুই দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকেই রাজধানীতে তীব্র যানজট শুরু হয়। দুপুর গড়িয়ে বিকাল আর বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও সেই যানজট রয়ে গেল রাজধানীতে।

শুধু কি গাড়িগুলোই থেমে ছিল এদিন। নাহ, গাড়ির সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্ম থেকে যেতে বাধ্য হয়। এদিন অফিসগামী মানুষের মধ্যে কিছু কিছু খুব সকালে বের হয়ে কর্মস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। তবে একটু দেরি করে যারা বের হয়েছে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তাতেই কাটাতে হয়েছে। কেউ কেউ দুপুরের পর কর্মস্থলে পৌঁছাতে পেরেছেন।

এতো গেল কর্মস্থলে যাওয়াদের কথা। এর বাইরে যারা অসুস্থ্য রয়েছে তাদের তো আরো বড় সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তীব্র যানজটের কারণে যাদের বিভিন্ন হাসপাতালে যাওয়ার দিনক্ষণ পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিল সমস্যায় পড়েছেন তারাও। হাসপাতালের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়েও নির্ধারিত সময় পৌঁছাতে পারেনি অসুস্থরা।

এদিকে রাজধানী থেকে যারা ঢাকার বাইরে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়েছেন তাদেরকেও বাস পেতে হয়েছে নির্ধারিত সময়ের পরে। আবার যারা বাস পেয়েছেন তাদের বহনকারী বাস ঢাকা থেকে সময়মত বের হতে পারেনি। যার কারণে গন্তব্যে যেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। আবার যারা ঢাকার বাইরে থেকে রাজধানীতে আসার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে রওনা হয়েছেন। ঢাকায় ঢুকতেই তাদের বেগ পেতে হয়েছে। আর ঢাকায় ঢুকেই তীব্র যানজটের মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের।

রাজধানীতে শুরু সভা-সমাবেশ আর বিভিন্ন রাজনীতিক দলের নানান আয়োজনের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অথচ রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম হচ্ছে সাধারণ মানুষদের সব ধরণের সমস্যা সমাধানের জন্য। আমরা কবে পারব রাজধানীকে কাণ্ডজ্ঞানহীন রাজনীতি থেকে মুক্ত করতে। 

আর কতকাল আমাদের পোহাতে হবে তীব্র যানজট নামক এই ব্যধি। জনগণের কল্যাণের নামে বারবার সেই জনগণের মাথায়ই কাঁঠাল ভাঙছেন রাজনৈতিক দলগুলো। এর থেকে উত্তরণে আমাদের আর কতকাল অপেক্ষা করতে হবে আরেকজন ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের জন্য!

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!