ফাইল ছবি
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকদের আটকে থাকা অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া আগামী সপ্তাহেই শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সোমবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রগতি’ প্রতিবেদন উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
গভর্নর বলেন, পাঁচ ব্যাংকের সংযুক্তি কার্যক্রম চলছে। গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ডিপোজিট গ্যারান্টি ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহ বা আগামী সপ্তাহের শুরু থেকেই আটকে থাকা অর্থ বিতরণ শুরু হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বৈদেশিক মুদ্রাবাজার অস্থিতিশীল থাকার কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পরামর্শ অনুযায়ী পুরোপুরি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার নির্ধারণে বাংলাদেশ এগোয়নি। তা হলে শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের মতো দ্রুত টাকার দর বেড়ে যেতে পারত। বর্তমানে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় পৌঁছানোর আশঙ্কাও ছিল। আমরা সব পরামর্শ অনুসরণ করিনি, তবে আজ মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণে আছে।
গভর্নর জানান, বিদেশি দায় পরিশোধে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছিল। সে সময় এলসি খোলার গ্যারান্টি কম থাকায় চাপ তৈরি হয়। দায়িত্ব নেওয়ার সময় ডলারের দাম ছিল ১২০ টাকা, এখন প্রায় ১২২ টাকা। রিজার্ভও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সুদহার সমন্বয় নিয়েও সরকারের ভেতর–বাহিরে আলোচনা চলছে। তার মতে, সুদহার বৃদ্ধির প্রভাবে মূল্যস্ফীতি কমেছে, আমানত বেড়েছে এবং বাজেট সহায়তার জন্য টাকা ছাপানো বন্ধ হয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, রাজস্ব আদায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও কর–জিডিপি অনুপাত কমছে, যা উদ্বেগের বিষয়। ভ্যাট আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। সংসদের অনুমোদন ছাড়া আর করছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান। পাশাপাশি ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, সামষ্টিক অর্থনীতির নানা সূচকে নেতিবাচক দিক এখনো দৃশ্যমান। তার মতে, বড় ধরনের সংস্কার বাস্তবায়ন এখনো হয়নি, আর সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানো হলেও এর বিপরীতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান কমেছে, আয় বৈষম্য বেড়েছে। তিনি মনে করেন, ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও দুর্নীতি দমন জরুরি ছিল, যা এখনো হয়নি।
এসএইচ







































