• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২৪ বছর পর রাগ ভাঙল আনোয়ারের 


ক্রীড়া ডেস্ক জুন ২৯, ২০২২, ০৭:৪০ পিএম
২৪ বছর পর রাগ ভাঙল আনোয়ারের 

ঢাকা: ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে অবসর নেয়ার পর ফুটবল কোচিংয়েই ছিলেন কাজী আনোয়ার। ১৯৯৪ সালে ঢাকা আবাহনীর লিগ চ্যাম্পিয়ন দলের সহকারী কোচও ছিলেন। ১৯৯৫ থেকে ঘটে বিপত্তি। 

২৮ বছর আগের ঘটনা স্মরণ করলেন এভাবে, ‘১৯৯৪ সালে মুন্নার অধিনায়কত্বে আবাহনী লিগ চ্যাম্পিয়ন হলো। কোচিং স্টাফ ও দলের সবাই থাকল পরের বছর। শুধু সহকারী কোচ আমি নেই। তিন মাস পর শুনতে পারলাম আমি হেলালের লোক এজন্য বাদ দেয়া হয়েছে।’ এই অভিমান থেকেই ফুটবল থেকে তার দূরে সরে যাওয়া। 

বর্তমান প্রজন্ম অবশ্য তাকে সেভাবে হয়তো চিনবে না। বাংলাদেশের ফুটবলের সোনালী সময়ের অন্যতম তারকা তিনি। বাংলাদেশ তো বটেই বিশ্ব ফুটবল ইতিহাসে বিরল ঘটনা খেলার মাঠের ঘটনা কেন্দ্র করে ফুটবলারদের জেলে যাওয়া। ১৯৮২ সালে সেই ঘটনার সূত্রপাত।

বাংলাদেশের ফুটবলের বিশেষ ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার পরেও এই আনোয়ার ফুটবল থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন দুই যুগের বেশি সময়। ১৯৯৫ সাল থেকে ফুটবল থেকে একেবারে দূরে ছিলেন। দুই যুগের বেশি সময় ফুটবলের সঙ্গে অভিমান ভেঙে আবার সেই প্রিয় খেলায় যুক্ত হয়েছেন। 

এবার চলতি পাইওনিয়ার ফুটবল লিগে কাজী আনোয়ার ফুটবল একাডেমী নামে একটি দল দিয়েছেন। এই দল দেয়ার বছর দুই আগে ফুটবল একাডেমি পরিচালনা শুরু করেন। 

এতোদিন পর ফুটবলের প্রতি অভিমান ভাঙার কারণ সম্পর্কে আনোয়ার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ফুটবল থেকে দূরে ছিলাম। বছর দুই আগে মনে হয়েছে ফুটবলের জন্যই আজকের আনোয়ার। ফুটবলের জন্য কিছু করা প্রয়োজন। এজন্য নিজের অর্থায়নে কুড়িগ্রামে কয়েকজন ফুটবলার নিয়ে ক্যাম্প শুরু করি। সেই ক্যাম্প থেকে অনেকেই বাফুফের একাডেমিতে সুযোগ পেয়েছে।’

সত্তর-আশির দশকের ফুটবলারদের অনেকেই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। কোনো তারকা ফুটবলার নিজের নামে তৃণমূল পর্যায়ে দল গড়তে দেখা যায়নি। কাজী আনোয়ার সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। নিজের নাম দিয়েই এবার পাইওনিয়ারে দল দিয়েছেন,‘আমার ইচ্ছে ছিল শেখ কামাল একাডেমী নামে পাইওনিয়ারে দল দেয়ার। এজন্য ট্রাস্টের অনুমতি প্রয়োজন। বাফুফে শেখ কামাল নাম অনুমোদন দেয়নি, তাই আমার নামেই পাইওনিয়ার দল গড়ি।’ 

গত ১৪ বছর বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। ঢাকা আবাহনী আনোয়ার তার সঙ্গে খেলেছেন অর্ধ যুগের বেশি সময়। সালাউদ্দিন এত দিন সভাপতি থাকলেও এই পাইওনিয়ার সূত্রেই তার কাছে প্রথম গিয়েছিলেন আনোয়ার।  

এত দিন পর ফুটবল কাঠামোতে ফিরেও খুব সুখকর স্মৃতি হয়নি তার। কাজী আনোয়ার ফুটবল একাডেমি পাইওনিয়ারে প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে। সুপার লিগে উঠতে পারেনি। 

এ নিয়ে দুঃখ না থাকলেও আক্ষেপ ঝরল এই সাবেক জাতীয় ফুটবলারের কন্ঠে, ‘আমাদের মিরপুর ভেন্যুতে কয়েকটি দলেই দেখেছি অতিরিক্ত বয়সের ফুটবলার। এতে হয়তো দলগুলো সাময়িক সাফল্য পাবে তবে সামগ্রিকভাবে দেশের ফুটবলের ক্ষতি হবে।’

একসময় তিনি ছিলেন ক্রিকেট কোচ। ফুটবল থেকে ক্রিকেট কোচ হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘ফুটবলের পাশপাশি ক্রিকেটও খেলেছি আমি। ফুটবল যখন আমাকে রাখল না তখন ক্রিকেট কোচিংয়ের দিকে ঝুকি’। আনোয়ার ক্রিকেট কোচিং নামে স্কুলও খুলেন। সেখানে অনেক তরুণই ক্রিকেট শিখেছেন। 

আবাহনী ফুটবলের সাথে তার অভিমান থাকলেও ক্রিকেট কোচিং করান সেই আবাহনী মাঠেই এবং আবাহনী ক্রিকেট দলেও কোচিং করিয়েছেন। এর কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘আবাহনী ক্রিকেট দলের সঙ্গে ছিলাম বেশ কয়েক বছর। ক্রিকেটে যারা কর্মকর্তা ছিল ববি, জালাল, লিপু, তামিম সবাই আমার বন্ধুস্থানীয়। ফলে কোনো সমস্যা হইনি। ভালোই কাজ করেছি। পাশাপাশি একাডেমি কোচিং করে আমার জীবিকা নির্বাহ করেছি যা ফুটবল থেকে পাইনি।’

ফুটবলার আনোয়ারের ক্রিকেট কোচিংয়ের প্রশংসা করলেন বাংলাদেশ অভিষেক দলের কোচ সারওয়ার ইমরানও, ‘আনোয়ার ভাই দেশের অন্যতম কিংবদন্তি ফুটবলার নিঃসন্দেহে। ফুটবলার হলেও ক্রিকেট কোচিংয়ে আনোয়ার ভাই দক্ষতা দেখিয়েছে। সহকারী কোচ হিসেবে আমাকে অনেক সহায়তা করেছে।’

সোনালীনিউজ/এআর

Wordbridge School
Link copied!