ঢাকা: তাওহিদ হৃদয়ের শাস্তি নিয়ে বারবার অবস্থান পাল্টাচ্ছে বিসিবি। কখনো মোহামেডানের চাপে, কখনোবা খেলোয়াড়দের চাপে।
নজিরবিহীনভাবে আজ তৃতীয়বারের মতো মোহামেডান অধিনায়কের শাস্তি বদলেছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হৃদয় তার বাকি এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ভোগ করবেন ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের পরের আসরের প্রথম ম্যাচে। তার মানে অবশিষ্ট শাস্তি পিছিয়ে গেছে এক বছর।
বিসিবির এই সিদ্ধান্তের পর এবারের সুপার লিগে মোহামেডানের হয়ে বাকি দুই ম্যাচ খেলতে তার আর কোনো বাধা নেই। মিরপুরে কালই তাদের খেলা আছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের সঙ্গে।
তামিম ইকবালের নেতৃত্বে আজ বিকেলে একদল ক্রিকেটার মিরপুরের বিসিবি কার্যালয়ে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে হৃদয়ের শাস্তি নিয়ে কথা বলেন।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির আরও দুই পরিচালক ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমূল আবেদীন ও আম্পায়ার্স এবং মিডিয়া কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমান।
সূত্র জানিয়েছে, কাল রাতে সিসিডিএমের টেকনিক্যাল কমিটি আম্পায়ার্স বিভাগ কর্তৃক হৃদয়ের শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করে। শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়মানুযায়ী হয়নি বলেই সেটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছিল টেকনিক্যাল কমিটি।
তারা নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়, চলতি প্রিমিয়ার লিগের পরের ম্যাচেই নিষিদ্ধ থাকবেন হৃদয়, যে ম্যাচটি হবে শনিবার। কিন্তু আজ ক্রিকেটারদের সঙ্গে সভায় তাদের চাপে সেই সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয় বিসিবি। হৃদয়ের ব্যাপারে এখন নতুন সিদ্ধান্ত, তিনি বাকি এক ম্যাচের বহিষ্কারাদেশ ভোগ করবেন আগামী বছরের প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচে।
ক্রিকেটারদের চাপে একটা টুর্নামেন্টের টেকনিক্যাল কমিটির কাউকে দেওয়া শাস্তির সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলার এমন নজির বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসেই আর আছে কিনা সন্দেহ।
অভিযোগ আছে, এর আগে হৃদয়কে ম্যাচ রেফারির দেওয়া দুই ম্যাচের বহিষ্কারাদেশর সিদ্ধান্তও বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগ কমিয়েছিল তার ক্লাব মোহামেডানের চাপে পড়ে। যার জেরে বিসিবি থেকে পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশের একমাত্র এলিট আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ।
আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমান যদিও দুই দিন আগে সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, শরফুদ্দৌলা তার মত বদলেছেন; বাস্তবে সেটি হওয়া নিয়ে প্রবল সংশয় আছে। আর আজকের ঘটনার পর তো শরফুদ্দৌলার মত বদলানোর সম্ভাবনা আরও কমে গেল। কারণ অন্যান্য দেশের ক্রিকেটের মতো আম্পায়ার-ম্যাচ রেফারিদের সিদ্ধান্তই বাংলাদেশের ক্রিকেটে শেষ সিদ্ধান্ত নয়।
বিসিবির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা অবশ্য পুরো ঘটনায় বোর্ডের দায়টাই বেশি দেখেন। আজ যে তাদের খেলোয়াড়দের চাপে নতি স্বীকার করতে হলো, সেখানেও নিজেদের ভুলটাই আগে দেখছেন তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তারা বলেন, ‘যেহেতু আমরা এর আগে একটা ভুল করেছি, দাবি না মানা ছাড়া উপায় ছিল না। এখন ভবিষ্যতে যেন আর এ রকম না হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। বাইলজের বাইরে আমাদের এক চুলও যাওয়ার সুযোগ নেই। সমস্যা হলো অনেকে এটা পড়ে না, অনেকে বোঝেও না।’
এআর