• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দু‍‍`হাত পিছমোড়া করে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আদালতে সাংবাদিক


যশোর প্রতিনিধি মে ৩, ২০২০, ০৭:১২ পিএম
দু‍‍`হাত পিছমোড়া করে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আদালতে সাংবাদিক

যশোর: দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে উদ্ধারের পর দু'হাত পিছমোড়া করে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আদালতে নিয়ে আসার ঘটনায় সাংবাদিক ও সচেতন মহলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। 

রোববার (৩ মে) বেলা তিনটার দিকে শফিকুল ইসলাম কাজলকে (৫১) যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় পুলিশের উপস্থিতিতে তার দু'হাত পেছন দিক থেকে হ্যান্ডকাফ দ্বারা লক করা ছিল।

এ বিষয়ে যশোরের আইনজীবী মাহমুদ হাসান বুলু বলেন, সাংবাদিক কাজলের নিখোঁজের ঘটনায় দেশি-বিদেশি মিডিয়ার কল্যাণে দেশের বহু মানুষ তার সম্পর্কে জেনেছে। তিনি পালিয়ে যাওয়ার মতো মানুষও নন। তার সঙ্গে এমন আচরণ শোভনীয় নয়।

অবশ্য, পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, ইদানীং মামলার আসামিদের হাত পেছন দিক দিয়ে হ্যান্ডকাফ পরানোর বিধান শুরু হয়েছে। এটি ভুল হয়নি।

শনিবার (২ মে) রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে উদ্ধারের দাবি করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর রঘুনাথপুর ক্যাম্পের সদস্যরা। অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিযোগে তাকে আটক দেখিয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর আজ রবিবার সকালে তাকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে বেলা ১২টার দিকে তাকে যশোরের আদালতে পাঠায় পোর্ট থানার পুলিশ।

বেনাপোল থানার ওসি মামুন খান জানান, সাংবাদিক কাজলকে রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা উদ্ধার করেন। অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিযোগে তাকে আটক দেখিয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়। বেলা ১২টার দিকে তাকে কোর্টে পাঠানো হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, বেনাপোল থেকে পাঠানোর সময় তার পিছমোড়া দিয়ে হ্যান্ডকাফ পরানো ছিল না। নিয়ে যাওয়ার সময় হয়তো দেওয়া হতে পারে। তবে, এটি ভুল নয় দাবি করে তিনি বলেন, মাস ছয়েক হলো মামলার আসামিদের পিছমোড়া দিয়ে হ্যান্ডকাফ পরানোর নিয়ম হয়েছে।

এদিকে বেলা তিনটায় আদালতে উপস্থিত বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কাজল কুশল বিনিময় করেন। সেই সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গুম হয়ে যাওয়া যে কত কষ্টের, কত দুর্বিষহ, কত বেদনার, তা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। এখন আলোর মুখ দেখছি, আমি দেশবাসীর দোয়া চাইছি!

প্রসঙ্গত, সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল ১০ মার্চ সন্ধ্যায় ‘পক্ষকাল’-এর অফিস থেকে বের হন। এরপর থেকে কোনও সন্ধান না পেয়ে পরদিন ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন। ১৩ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শফিকুল ইসলাম কাজলকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত দেওয়ার দাবি জানায় পরিবার। ১৮ মার্চ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে সাংবাদিক কাজলের সন্ধান চাওয়া হয়। পরে ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক। সাংবাদিক কাজল নিখোঁজ হওয়ার পর তার সন্ধানের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কয়েক দফা কর্মসূচি পালন করেছেন সাংবাদিক সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!