• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের বিপক্ষে তামিমের সেই ইনিংস


রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ মে ২৪, ২০১৯, ০৯:১৪ পিএম
ভারতের বিপক্ষে তামিমের সেই ইনিংস

ফাইল ছবি

ঢাকা: খেলার ধরন, গতি ও ভারসাম্য মনে করিয়ে দিচ্ছিল সৌরভ গাঙ্গুলীর কথা। ২০০৭ ক্যারিবীয় বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অচেনা এক তরুণের ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যাটিংয়ের কাছেই হার মানতে হয়েছিল ক্রিকেটের প্রবল পরাশক্তি ভারতকে। বাংলাদেশী সেই তরুণের নাম তামিম ইকবাল।

শচীন টেন্ডুলকার সময় সুযোগ পেলেই জানিয়ে দেন, তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময় গেছে ২০০৭ বিশ্বকাপে। আর এটা হয়েছে বাংলাদেশের কারণেই। ক্যারিবীয় বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল রাহুল দ্রাবিড়ের ভারতকে। আর নির্দিষ্ট করে বললে, ভারতের পরাজয়ের গল্প লেখা হয়েছিল তামিমের এক বিষ্ফোরক ইনিংসে।

টস জিতে দ্রাবিড়ের ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেননি। আর তুলবেনই বা কেমন করে তখনকার ভারতীয় দলের ব্যাটিং লাইনআপ ছিল জগদ্বিখ্যাত। শুধু কাগজে-কলমে নয়, বাস্তবেও।

কিন্তু বাংলাদেশের বোলারদের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ভারতের ব্যাটিং। আব্দুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ রফিক ও মাশরাফি বিন মর্তুজা তাদের আটকে দিয়েছিল ১৯১ রানেই।

ব্যাটিংয়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পর দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের অনিন্দ্য সুন্দর দ্যুতি ছড়ানো সব শট। এর বেশিরভাগ যিনি করে দেখাচ্ছিলেন তিনি ১৭ বছরের এক যুব ওপেনার। বিশ্ব ক্রিকেটে তার নামটা তখনও অপরিচিতই ছিল। তবে বাংলাদেশের সবাই সেই ১৭ বছরের তামিমকে হার্ডহিটার ও অকুতোভয় তরুণ হিসেবেই চিনত।

বাংলাদেশের ইনিংসের ১১তম ওভারে জহির খানকে পর পর তিনবার সীমানা ছাড়া করলেন তামিম। এর মধ্যে একটা ছক্কাও ছিল। জহির তামিমকে প্রলুব্ধ করার জন্যই হয়তো শর্ট বল করেছিলেন। কিন্তু বাঁহাতি এই ওপেনারের প্রসারিত ব্যাটের আঘাতে বল বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করল। রাউন্ড দ্য উইকেটে গিয়ে  জহির ফের তামিম বধের অস্ত্র বানাতে চাইলেন শর্ট বলকে। এবার পয়েন্টের দিকে কাট করলেন তামিম। কী আর করা, দিশা না পেয়ে পরেরটিও শর্ট বল করলেন জহির। তামিম আরও নির্ভীক হয়ে ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে মিড অন দিয়ে বলকে সোজা গ্যালারিতে পাঠালেন। তামিমের ইনিংসটিই বাংলাদেশের জয়ের ভীত গড়ে দিয়ে যায়। পরে বাকি কাজটুকু সারতে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের কোনও সমস্যাই হয়নি।

পরে ভারত ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম সত্যিকারের নায়ক সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান বলেছিলেন, ‘মাশরাফি যদি ভারতের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়ে থাকেন, তবে ভারতের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছিল তামিমের শটগুলো। আমি এও বলতে পারি, আমাদের প্রজন্মে এমন সাহসী ক্রিকেটার ছিল না।’

ভারতের হয়ে  কেবল একা লড়াই চালালেন সৌরভ গাঙ্গুলী। তবে সেটা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। পরের ম্যাচেই বারমুডাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছিল দ্রাবিড়ের দল। কিন্তু শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে হেরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল ভারত। বাংলাদেশ সুপার এইটে গিয়ে পর্যদুস্ত করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দুর্দান্ত একটি বিশ্বকাপ কাটানোর পরও খচখচানি একটা জায়গায় ছিল বাংলাদেশের। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পাশাপাশি যে বাংলাদেশকে হারতে হয়েছিল আয়ারল্যান্ডের কাছে। এটুকু বাদ দিলে ২০০৭ বিশ্বকাপ ছিল বাংলাদেশের অনেক অর্জনের।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!