• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রমজানে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করে দেয়া হয়


 ধর্মচিন্তা ডেস্ক মে ২১, ২০১৯, ১২:৩১ পিএম
রমজানে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করে দেয়া হয়

ঢাকা: সুবহে সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, কামাচার, পাপাচার প্রভৃতি কাজ পরিহার করে যে একটানা সংযম সাধনা করে তারই ফল হল পরম করুনাময় আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি ও করুনা বৃষ্টি। সুর্যাস্তের সাথে সাথেই সকল রোজাদারগণ ইফতার করেন। প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন যে, আমার উম্মতগণ ততক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণের উপর থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত সাহরী বিলম্বে এবং ইফতার অবিলম্বে করতে থাকবে। (মিশতাক শরীফ)

ইফতারের ফজিলত সম্পর্কে প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, এটা এমন একটি মাস, যে মাসে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। এই মাসে কোন রোজাদারকে যে ব্যক্তি ইফতার করায় ঐ ব্যক্তির ইফতার করানোর কারণে তাঁর পূর্বকৃত গোনাহ সমুহ মাফ করে দেয়া হয়। সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করে এবং রোজাদার রোজার জন্য যে পরিমাণ ছওয়াব পায় ঐ ব্যক্তিও সে পরিমাণ ছওয়াব লাভ করবে। কিন্তু তাতে রোজাদারের ছওয়াব একটুও কম হবে না। আমরা বললাম হে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের অনেকের তো এমন সামর্থ নেই যে, কোন একজনকে ইফতার করাতে পারবে। রাসুল (সা.) বলেন যদি কেউ পানি মিশানো দুধ অথবা খেজুর অথবা এক ঢোক পানি দিয়েও ইফতার করায় তাহলে আল্লাহপাক তাঁকে এই ছওয়াব দান করবেন। আর রোজাদারকে যদি কোন মুমিন পরিতৃপ্ত করে খাওয়ায় তবে তাঁকে আল্লাহপাক হাউজে কাওছার থেকে এমন পানি পান করাবেন যে, সে জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত মোটেই পিপাসার্ত হবে না। এটা এমন এক মহান মাস যার প্রথম ভাগে রয়েছে রহমত, মধ্যভাগে ক্ষমা এবং শেষ ভাগে রয়েছে জাহান্নাম থেকে নিস্কৃতি।

ইফতারের দোয়া: হে আল্লাহ আমি তোমারই জন্য রোজা রেখেছি, তোমারই প্রতি ঈমান এনেছি এবং তোমারই প্রতি আস্থা স্থাপন করেছি ও তোমারই দেয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করেছি, তোমারই অনুগ্রহে হে দয়ার ভান্ডার। নবীয়ে করীম (সা.) এরশাদ করেন যে, রোজাদার ব্যক্তির জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে। প্রথমত: যখন রোজাদার ইফতার করে তখন তাঁর আনন্দ লাগে। দ্বিতীয়ত: ক্বিয়ামতের দিবসে মহান আল্লাহ পাকের দিদার লাভ করবে, তখন সে আনন্দিত হয়। (মাজমাউল ফাওয়ায়েদ খন্ড: ১. পৃ: ৪০৫, আততারগীব ওয়াততারহীব খন্ড. ২. পৃ: ২০৩)
 
ইফতারের সময় হালাল জিনিস দ্বারা ইফতার করবে এবং হারাম এমনকি সন্দেহযুক্ত জিনিস দ্বারা ও ইফতার করবে না। নতুবা ফলাফল এই হবে যে, সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে সুর্যাস্ত পর্যন্ত পুরোদিন হালাল খানাকে ও ত্যাগ করলো। যখন ইফতার করার জন্য বসলো তখন হারাম রিযিক দ্বারা ইফতার করেন। তার উপমা এই যে, পূরো দিন কষ্ট করে একটা প্রাসাদ তৈরী করলো এবং সন্ধ্যা বেলায় তা ধ্বংস করে দিল। (মাজমাউজজাওয়ায়েদ ওয়া মাবাউল ফাওয়ায়েদ খন্ড: ৩. পৃ: ১৫৬)

নবী করীম (সা.) বলেন যেমন ভাবে বিষ শরীরের জন্য ধ্বংসের কারণ, তেমনিভাবে হারাম রিজিক ও দ্বীনের জন্য ধ্বংসের কারণ (মিশকাত শরীফ খন্ড: ১. পৃ: ২৪২)

ইমামুল আম্বিয়া নবীয়ে আকরাম (সা.) আরো বলেন যে, হালাল রিযিকের উপমা ঔষধ এবং হরামের রিযিকের উপমা বিষ। (মিশকাত শরীফ পৃ: ২৪১) খেজুর দ্বারা ইফতার শুরু করবে তার পর পানি দ্বারা। (মিশকাত শরীফ খন্ড: ১. পৃ: ১৭৫) রমজানুল মুবারকে আল্লাহপাক তার বান্দাদিগকে এমন পাঁচটা জিনিস দান করেছেন যা পূর্ববর্তী কোন উম্মতকে দান করেননি। এক. রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহপাকের নিকট মিশক থেকে ও অধিক পছন্দনীয়। দুই. ইফতারের সময় সমুদ্রের মাছ সমুহ রোজাদারের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে। তিন. রোজাদারের জন্য প্রত্যেক দিন জান্নাতকে সুসজ্জিত করা হয়। চার. রমজানে অবাধ্য শয়তানদিগকে বন্দী রাখা হয়। পাঁচ. রমজানের শেষ রাতে রোজাদারকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (আততারগীব ওয়াত তারহীব. খন্ড: ২. পৃ: ২১৪)

সোনালীনউজ/ঢাকা/এসআই

Wordbridge School
Link copied!