• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ান-ইলেভেন’র দশ বছর


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১১, ২০১৭, ০৫:১০ পিএম
ওয়ান-ইলেভেন’র দশ বছর

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় রণক্ষেত্রের চিত্র

ঢাকা: আজ ১১ জানুয়ারি। দশ বছর আগে, ২০০৭ সালের এই দিনে আবির্ভাব ঘটেছিল কথিত ওয়ান ইলেভেন-এর। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের একতরফা সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আবরণে গঠিত হয় সেনা নিয়ন্ত্রিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে পরবর্তীতে এটিকে ওয়ান ইলেভেন হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়।

২০০৭ সালের এই দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফখরুদ্দীন আহমদ। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি হলেও মার্কিনিদের অনুসরণ করে একে এক-এগারো বা ওয়ান-ইলেভেন বলা হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৃষ্ট অনাস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের এদিনে জরুরি অবস্থা জারি এবং সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়।

বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে বহুল আলোচিত ১/১১ এর দশ বছর পূর্তি আজ। ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে প্রধান উপদেষ্টা করে তার নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়। কিন্তু শুরু থেকেই এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আওয়ামী লীগের আপত্তির কারণে নানা বিতর্ক শুরু হয়।

রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যেতে থাকলে সরকারের উপদেষ্টারা একে একে পদত্যাগ করতে থাকেন। এরই মধ্যে ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নির্বাচনের ঘোষণা দেয়া হলে আওয়ামী লীগ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। একপর্যায়ে সেনাসমর্থনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. ফখরুদ্দীন আহমদ।

এর আগে বিচারপতি কেএম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে না মানা এবং নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবিতে আওয়ামী লীগের আন্দোলনে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। একপর্যায়ে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ নিহত হন।

এভাবে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় একপর্যায়ে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভেঙে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন। তখন সেনা প্রধান ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (পরে জেনারেল) মইন উ আহমদ। জরুরি অবস্থা জারির পর থেকে তিনি সব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। পরবর্তীতে এই সরকারের নাম হয় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তিনিই এক অনুষ্ঠানে ১১ জানুয়ারির জরুরি অবস্থা জারির দিনটিকে ওয়ান-ইলেভেন বা এক-এগারো নামে আখ্যায়িত করেন।

এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের করে দেশের প্রধান দুই দলের দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় সামরিক বাহিনী ও দেশের একটি প্রভাবশালী মহল দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে প্রচারণা শুরু করে। দেশের গণমাধ্যমে তৎকালীন এই প্রচেষ্টাকে মাইনাস-টু ফর্মূলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!