• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষুব্ধ জাতিসংঘ, উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ২৪, ২০১৬, ০৬:১৮ পিএম
ক্ষুব্ধ জাতিসংঘ, উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ

ঢাকা: মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার বিবিসির কাছে এই কথা বলেন সংস্থাটির শরণার্থী বিষয়ক দপ্তরের প্রধান জন ম্যাককিসিক।

তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। দেশটির সেনাবাহিনী এবং সীমান্তরক্ষীরা রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর ‘সামষ্টিক শাস্তি’ অব্যাহত রেখেছে বলেও মন্তব্য করেন ম্যাককিসিক।

ম্যাককিসিক আরো বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী পুরুষদের হত্যা করছে, তাদের ধরে ধরে গুলি করছে, শিশুদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে, নারীদের ধর্ষণ করছে, বাড়িঘর লুট করছে ও পুড়িয়ে দিচ্ছে এবং সেখানে বসবাসরতদের নদী পাড় হয়ে বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য করছে।

বাংলাদেশ সীমান্ত খোলা রাখলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী নির্যাতনের ব্যাপারে আরো উৎসাহ পেয়ে যাবে জানিয়ে ম্যাককিসিক বলেন, ‘সীমান্ত খোলা রাখা বাংলাদেশ সরকারের জন্যও দুষ্কর। এতে মিয়ানমার সরকারকে উৎসাহিত করা হবে। সীমান্ত খুলে দিলে তারা মুসলিম সংখ্যালঘুদের ‘জাতিগত নির্মূল’র লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাবে এবং তাদের বাংলাদেশে প্রবেশে বাধ্য করবে।’

এর আগে বুধবার (২৩ নভেম্বর) মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে রাখাইন রাজ্যের সামরিক অভিযানের ব্যাপারে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার। সোমবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিও) জানায়, মিয়ানমারে ছয় সপ্তাহের অভিযানে রোহিঙ্গাদের ১ হাজার ২০০’র বেশি বাড়িঘর ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে গত ৯ অক্টোবর হামলার ঘটনায় ৯ পুলিশ নিহত হওয়ার পর থেকে সেখানকার রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের দমন-পীড়ন শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, ওই হামলার পেছনে রোহিঙ্গারা জড়িত।

এদিকে কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের অভিযান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক সমালোচনায় পড়েছে। শান্তিতে নোবেলজয়ী ও দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি’র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এসব নিপীড়নের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত নীরব রয়েছেন তিনি। ৯ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৩০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। যদিও স্থানীয় রোহিঙ্গাদের দাবি এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি হবে।

২০১২ সালের এক সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় স্থানীয় বৌদ্ধদের হাতে নির্মম নির্যাতন এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় রোহিঙ্গারা। তখনও এসব ইস্যুতে কোনো কথা বলেননি সু চি। বারবার রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বিতর্কিত হয়ে উঠছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি এবং বর্তামানে মিয়ানমারের রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা তার নেতৃত্বাধীন দল।

সোনালীনিউজ/ ঢাকা/ আরএস

Wordbridge School
Link copied!