• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভাঙছে মহাদেশ, মহাবিপদের পদধ্বনি


আন্তর্জাতিক ডেস্ক  জানুয়ারি ৯, ২০১৭, ০৯:১৩ পিএম
ভাঙছে মহাদেশ, মহাবিপদের পদধ্বনি

ঢাকা: যে কোনো মেরুর জমাট বরফ গলা অনেকটা স্বাভাবিক ঘটনাই। তবে এই স্বাভাবিক ঘটনা অতিমাত্রায় হলে তা বিপর্যয়ের আলামত। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণ মেরুর বরফ গলছে খুব তাড়াতাড়ি। অর্থাৎ অস্বাভাবিকভাবে। দুদশক আগে থেকেই গ্রিনহাইজ প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক হৈ চৈ শুরু হয়। একই সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার আশঙ্কাও পেয়ে বসে বিশ্ববাসীকে।

তবে গবেষকরা বলছেন, ২০০০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার কমে গেলেও গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমেনি। তবে এটা প্রকৃতির খেয়াল, না আর কোনো কিছু, তা জানেন না বিজ্ঞানীরা।

তথ্যমতে, গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ মেরুতে বরফ গলার হার অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। বিগত এক হাজার বছরের মধ্যে এ হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে দাবি করছেন অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের গবেষকরা। গেল ৬০০ বছর আগে যতোটা বরফ গলতো, সে তুলনায় গেল ৫০ বছরে বরফ গলার তীব্রতা বেড়েছে দশগুণ। যা নিশ্চিত অস্বাভাবিক।

কয়েক বছর আগে গবেষকরা কুমেরু উপদ্বীপের জেমস রস দ্বীপের বরফে ৩৬৪ মিটার পাইপ ঢুকিয়ে সেই বরফ অংশ অংশ করে বের ও বিশ্লেষণ করে দেখেছেন যে, গেল ৬০০ বছরে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে ১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। আর এ কারণে বরফ গলার তীব্রতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, তার ফলে জলবায়ু পরিবর্তন, সর্বজনবিদিত এই তথ্যের একটা নতুন প্রমাণ পাওয়া গেল বলে যারা প্রসঙ্গটি ফাইলবন্দী করতে চাইবেন, তাদের জন্য প্রশ্ন থাকবে: গত শতাব্দীর আশির ও নব্বইয়ের দশকে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা যেমন খুব তাড়াতাড়ি বেড়েছিল, এই শতাব্দীর প্রথম দশকে সেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির গতি আবার ধীর হয়ে পড়েছে।

দক্ষিণ মেরুর বরফ-দেয়ালের ফাটল দেখা গিয়েছিল গেল বছরের নভেম্বরেই। এক মাসের মধ্যেই সেই ফাটল বেড়ে প্রায় ১৮ কিলোমিটার হয়ে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই বরফ ভেঙে পড়তে পারে মূল চাঁই থেকে।

প্রকৃতির এই ভয়ানক রূপ ধরা পড়েছে নাসার ‘অপরেশন আইসব্রিজ’-এর তথ্যে। ‘লারসেন সি’ নামে ওই আইস-শেল‌্ফ, বর্তমানে মূল মহাদেশটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মাত্র ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি ক্ষুদ্র উপদ্বীপের মাধ্যমে।

বৈজ্ঞানিকদের মতে, দু-এক মাসের মধ্যেই হিমশৈলীটি মূল উপদ্বীপ থেকে ভেঙে যাবে। বর্তমানে আইসবার্গটির আয়তন প্রায় ১১৩ কিলোমিটার লম্বা, ৩০০ ফুট প্রস্থ ও ৫০০ মিটার গভীর। বিশেষজ্ঞদের মতে, হিমশৈল এ ভাবে ভেঙে যাওয়ার ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যায়। এর আগে, ২০০২ সালেও ‘লারসেন সি’ আইস-শেল‌্ফ থেকে হিমশৈল ভেঙে পড়ে। তবে, তা আকারে ছোট ছিল। মূলত বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার কারণেই হচ্ছে এই অঘটন।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!