ঝিনাইদহ : কয়েকদফা প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের দশা যখন কাহিল, তখন বৈশাখী মেলার নামে অশ্লিলতা ও জুয়ার আসরে গ্রামের মানুষ আরো ফতুর হয়ে যাচ্ছে। আয়োজকরা এতই বেপরোয়া যে নামাজের সময় পর্যন্ত মাইক বন্ধ করছে না। লটারীর নামে গ্রামগঞ্জে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে র্যা ফেল ড্র’র প্রচার মাইক। এ নিয়ে মানুষ ক্রমশ ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। মেলা হচ্ছে গ্রামবাংলা ঐতিহ্য। কিন্তু মেলার অনুমতি নিয়ে মুলত জুয়া খেলাকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার ব্যানারে সেখানকার কাশিপুর রেলওয়ে মাঠে চলছে বৈশাখী মেলা। অথচ বৈশাখী মেলার অনুমতি নিয়ে নীতি নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে মেলার মাঠের বাইরে চরকা, ওয়ানটেন ও ফোরগুটির ঘর বানানো হয়েছে।
রিয়াজ নামে এক জুয়াড়ি এই কোর্টের মালিক। তিনিই জুয়া খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র আশরাফুল আলম অভিযোগ খন্ডন করে বলেন, প্রতি বছর বৈশাখী মেলা হয়। এবারো হচ্ছে। আমি আয়োজকদের কঠোর ভাবে বলেছি কোন ধরণের জুয়া খেলা হবে না। জুয়া চল্লে তিনি নিজেই মেলা ভেঙ্গে দিবেন বলে জানান।
তিনি আরো জানান, আগে হয়তো চলল্লেও এখন আর চলছে না। তবে প্যানেল মেয়রের এই বক্তব্য নেওয়ার পর রাতে সাংবাদিকদের একটি বিশেষ টিম গোপনে জুয়া খেলার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন। কালীগঞ্জ থানার ওসির বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে কল করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ফোন দিলে তিনিও ফোন ধরেন নি।
এদিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুর বাজারে র্যা ফেল ড্র’র নামে ভিন্ন ধাচের জুয়া খেলা চলছে। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০চি প্রচার মাইক গ্রামগঞ্জ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এই প্রচার মাইক নামাজের সময় পর্যন্ত বিরতী দিচ্ছে না। এলাকার যুবসমাজ র্যা ফেল ড্র’র ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে।
এদিকে কুলবাড়িয়া বাজারেও মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। সেখানেও সাজগোজ করছে। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, র্যা ফেল ড্র’র কথা শুনেছি। আপনারও খবর নেন। আমিও নিচ্ছি। তারপর কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় দেখছি। বিষয়টি নিয়ে র্যা ব-৬ এর অধিনায়ক খোদাদাত জানান, আসলে মেলার অনুমতি দেন জেলা প্রশাসক। তারপরও আমরা অনুসন্ধান করে দেখছি।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :