• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যত্রতত্র গড়ে উঠছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি এপ্রিল ২৩, ২০১৮, ০৩:১৩ পিএম
যত্রতত্র গড়ে উঠছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার

কুষ্টিয়া : সেবার মান সন্তোষজনক না হলেও কুষ্টিয়ায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব সেন্টারের অধিকাংশ অনুমোদনবিহীন বা অনুমোদন থাকলেও কোন নিয়মনীতি মানছে না। সরকারি নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের পকেট ভারী করতে জনসাধারনকে বানাচ্ছে বলির পাঠা। আর তাদের এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে সরকারী, বেসরকারী ও গ্রাম্য এক শ্রেণীর ডাক্তাররা। সাধারন জ্বর থেকে শুরু করে যে কোন রোগের শতকরা ৪০ ভাগ কমিশনের বিনিময়ে রোগ নির্ণয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ডায়াগনিস্টক সেন্টার নামক বাণিজ্য কেন্দ্রে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের অনেক রোগী বিভিন্ন টেস্ট করাতে হাসপাতাল মোড়ে অবস্থিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে যায়। কিন্তু মল-মূত্র ও রক্তসহ অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালে স্বল্প খরচে করা যায়। কেন হাসপাতালের রোগীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বাইরে যায় এই তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, হাসপাতালে কর্মরত কিছু অসাধু ল্যাব টেকনিশিয়ানরা তাদের পকেট ভারী করার জন্য দূর থেকে আসা গরীব রোগীদের বাইরে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠায়।

কারণ প্রতি মাসে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে অসাধু ল্যাব কর্মকর্তারা মোটা অংকের কমিশন পায়। আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা এই সুযোগে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে অসহায় রোগীদের কাছ থেকে। এতে গরীব রোগীরা পড়ছে বিপাকে। শুধু তাই নয়, এখন ডায়াগনিস্টক সেন্টার গুলোতে বিভিন্ন নামীদামী ডাক্তাররা রোগী দেখছে। এখানেও আছে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ডাক্তারদের কমিশন। তাই বিভিন্ন ডাক্তার তাদের কাছে সেবা নিতে আসা রোগীদের প্রয়োজনের বাইরেও নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে থাকে। আর এই সেন্টার গুলোতে রোগী নিয়ে আসার জন্য রয়েছে এক ঝাক দালাল চক্র। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, কুষ্টিয়াতে অবস্থিত অধিকাংশ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ‘মেডিকেল প্রাকটিস এ্যাক্ট (১৯৮৩)’র’ আইনও মানছে না।

দিকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি সেবার মান। হাতুড়ে বা শিক্ষারত অপারেটর ও প্যাথলজিস্ট দিয়ে চলছে অধিকাংশ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। যার ফলে অনেক সময় রোগ নির্ণয়ে রোগীরা পাচ্ছে না সঠিক ফলাফল। আর এ অসম্পূর্ণ ফলাফলের উপর ভিত্তি চিকিৎসা দেওয়া রোগীর জীবন হুমকির মুখে পড়ছে। তবে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে কুষ্টিয়া জেলার বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হাতুড়ে টেকনিশিয়ান দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আগে থেকে সাক্ষর করা প্যাডে রিপোর্ট প্রদান করা হচ্ছে। হিসাব মতে জেলায় ছোট বড়সহ মোট ৫০টি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও প্রাইভেট হাসপাতাল রয়েছে। তবে এসবের অধিকাংশ সেবার দিক দিয়ে খুবই নিম্নমানের। এইসব সেন্টারগুলোর নেই কোন নিজস্ব ভবন।

এছাড়া পরীক্ষা নিরীক্ষায় ব্যবহার করা হচ্ছে পুরাতন যন্ত্রপাতি। এছাড়াও কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল মোড়, কাটাইখানা মোড়, পেয়ারাতলা মোড়সহ অধিকাংশ এলাকার ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো অপরিস্কার ও নোংরা। এছাড়া বাথরুমের অবস্থা শোচনীয়। এ রকম পরিস্থিতি বিরাজ করলেও দেখার কেউও নেই। সব অনিয়ম যেন অর্থের কাছে নিয়মে পরিণত হয়েছে। অথচ এসব দেখতে সিভিল সার্জনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। কারন সিভিল সার্জনের কর্মকর্তাদের যোগসাজেশে লেনদেনেই রফা হয়ে যায়। যার ফলে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনা সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন সচেতনমহল।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!