• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেষের আক্ষেপে ওয়েলিংটন টেস্টে হেরেই গেল বাংলাদেশ


ক্রীড়া ডেস্ক জানুয়ারি ১৬, ২০১৭, ১১:৪৩ এএম
শেষের আক্ষেপে ওয়েলিংটন টেস্টে হেরেই গেল বাংলাদেশ

ঢাকা : এভাবেও তাহলে হারা যায়! আরও একবার টেস্ট ক্রিকেট প্রমাণ করল তার শ্রেষ্ঠত্ব। ক্রিকেটের সব রোমাঞ্চ দেখা দিল বেসিন রিজার্ভের শেষ দিনে। চার দিন প্রাধান্য বিস্তার করেও ওয়েলিংটন টেস্টে হেরে গেল বাংলাদেশ। সফরকারীদের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের জয়টা এসেছে ৭ উইকেটে।

আজ শেষ দিনে স্টেডিয়ামের গ্যালারি উন্মুক্ত করে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট। স্থানীয় দর্শকেরা তাই হাজির হয়েছিলেন দলে দলে। সমর্থকেরা নিজেরাও ভাবতে পারেননি কী দুর্দান্ত উপহার অপেক্ষা করছে তাঁদের জন্য। চতুর্থ দিন শেষেও ড্র হবে বলে মনে হচ্ছিল, সে টেস্টটাই জিতে গেল স্বাগতিক দল।

হারার আগেই তো হেরে গেল বাংলাদেশ। চা-বিরতির আগেও লড়াইয়ের চেষ্টা ছিল বাংলাদেশের মাঝে। কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সে আত্মবিশ্বাস উড়ে গেল কর্পূরের মতো। বোলারদের মধ্যে দেখা গেল না কোনো তাড়না, ফিল্ডারদের কাঁধ নুইয়ে পড়ল, মাঠে কোথাও শোনা যাচ্ছে না কোনো উৎসাহ বাণী। বোলাররা ভুলে গেলেন লাইন লেংথ, ফিল্ডারদের কাছ থেকেও পাচ্ছিলেন না প্রয়োজনীয় সাহায্য। ভাবভঙ্গিতে বোঝা যাচ্ছিল, ম্যাচের এমন রূপ এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না তাঁদের!

চতুর্থ দিন শেষ সেশনে নিউজিল্যান্ডকে গুটিয়ে দিয়ে লিড নেওয়ায় ড্রয়ের আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম ইনিংসের মতো আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পারল না বাংলাদেশ। শেষদিন মাত্র ১৬০ রানে শেষ হয় তাদের দ্বিতীয় ইনিংস। নিউজিল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২১৭ রান। শুরুতেই মেহেদী হাসান মিরাজ জোড়া আঘাত হেনে ফের ক্ষীণ আশা জাগান। কিন্তু কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরের অর্ধশতাধিক রানের জুটিতে সেই আশাটুকু ভেস্তে যায়। ফলাফল- বাংলাদেশ হেরে গেল ৭ উইকেটে। মাত্র ৩৯.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ২১৭ রান করে নিউজিল্যান্ড। এ জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

মিরাজের স্পিনে মাত্র ৩৯ রানের মধ্যে দুই কিউই ওপেনার সাজঘরে ফেরেন। জিত রাভালকে (১৩) ফিরতি ক্যাচে সাজঘরে পাঠান তিনি। তার পরের ওভারেই টম ল্যাথামের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি নেন এ ডানহাতি স্পিনার। প্রথম ইনিংসে ১৭৭ রান করা ল্যাথাম ১৬ রানে বোল্ড হন। তবে এ ধাক্কা ভালোভাবে সামাল দিয়েছে কিউইরা। উইলিয়ামসন সেঞ্চুরি ও টেলর ফিফটি করে দলের জয়কে সহজ করেন। ৪৩ বলে ৮ চারে ছোঁয়া পঞ্চাশ রানের ইনিংসকে উইলিয়ামসন ১৫তম শতক বানান ৮৯তম বলে। এর আগে ৬১ বলে হাফসেঞ্চুরি করা টেলরকে ৬০ রানে আউট করে ১৬৩ রানের জুটিটি ভাঙেন শুভাশীষ রায়। ১০৪ রানে অপরাজিত ছিলেন উইলিয়ামসন। অপর প্রান্তে ৪ রানে খেলছিলেন হেনরি নিকলস।  

পঞ্চম ও শেষদিন সকালে  যতক্ষণ পারা যায় টিকে থাকার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ছিল ৩ উইকেটে ৬৬ রান। ১০ রানে অপরাজিত মমিনুল হকের সঙ্গে ব্যাটিং ক্রিজে নামেন সাকিব আল হাসান। প্রথম ইনিংসের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান হতাশ করেছেন। ৫ বল খেলে রানের খাতা না খুলেই মিচেল স্যান্টনারের বলে কেন উইলিয়ামসনকে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব।

ইনিংসটাকে লম্বা করতে পারেননি মমিনুলও। নেইল ওয়াগনারের বলে ২৩ রানে কলিন গ্রান্ডহোমের তালুবন্দী হন এ ব্যাটসম্যান। ওই ধাক্কা সামাল দিতে মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমান ভালো প্রতিরোধ গড়েছিলেন। কিন্তু টিম সাউদির একটি শর্ট বল মাথায় লেগে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন মুশফিক। ক্রিজে সময় পার করার ভালো ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি ৫৩ বলে ১৩ রান করে। মুশফিক হাসপাতালে রওনা হলে তাসকিন আহমেদ নামেন। ২৩ বল খেলে ৫ রানে তিনি উইকেট দেন ট্রেন্ট বোল্টকে। প্রথম সেশনে ৭১ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে লাঞ্চে যায় সফরকারীরা।

দ্বিতীয় সেশনে এসে সাব্বির রহমানের টানা হাফসেঞ্চুরি শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার আশা জাগায়। কিন্তু টানা দুই ওভারে দুই উইকেট হারালে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ৯৭ বলে ৯ চারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি করেন সাব্বির। কিন্তু আর ৪টি বল খেলে ইনিংস সেরা ৫০ রান করে বোল্টের বলে বিজে ওয়াটলিংয়ের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি। আগের ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বী ১ রানে সাউদির শিকার হন। এখানেই শেষ হতে পারত ইনিংস। কিন্তু চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না উঠলেও ক্রিজে নামেন ইমরুল কায়েস।

২৮ রানে আগের দিন রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া ইমরুল ব্যক্তিগত রানের ঝুলিতে আরও ৮ রান যোগ করেন। ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। অপর প্রান্তে শুভাশীষ রায় নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলে ৯ উইকেটেই শেষ হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। কারণ মুশফিকের আর নামা হয়নি। ২১৬ রানে লিড নেয় বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৮ উইকেটে ৫৯৫ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ড গুটিয়ে যায় ৫৩৯ রানে। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!