• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
আন্তর্জাতিক জরিপ

সাড়ে ১০ ঘণ্টার শ্রমিক বস্তির শিশুরা!


নিউজ ডেস্ক ডিসেম্বর ৯, ২০১৬, ১১:১০ এএম
সাড়ে ১০ ঘণ্টার শ্রমিক বস্তির শিশুরা!

ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় বস্তির শিশুরা প্রতিদিন সাড়ে ১০ ঘণ্টার শ্রম বিক্রি করছে। সেই হিসেবে এই বস্তিবাসী শিশু শ্রমিকরা সপ্তাহে গড়ে ৬৪ ঘণ্টা কাজ করে থাকে। তাদের বেশিরভাগই চাকরি করে তৈরি পোশাক কারখানায়, যেখানে বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডগুলোর পোশাক-পরিচ্ছদ তৈরি করা হয়।

আর এসব বস্তিবাসী শিশুদের মধ্যে ১৫ শতাংশই স্কুলে যায় না। তাদের বয়স ৬ থেকে ১৫ বছর এবং তারা কারখানাগুলোতে পূর্ণকালীন (ফুলটাইম) চাকরি করে।

লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও মানবকল্যাণ বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের (ওডিআই) নতুন একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল বুধবার নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা কাজ করে, সেখানে বাংলাদেশের শিশুরা করে ৬৪ ঘণ্টা করে। এর মধ্য দিয়ে এ দেশের শিশুরা নির্মম অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যায়।

‘শিশুশ্রম ও শিক্ষা : ঢাকার বস্তিবাস জরিপ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বস্তি এলাকার দুই-তৃতীয়াংশ কিশোরী দেশটির দ্রুত বিকাশমান পোশাক কারখানাগুলোতে পূর্ণকালীন কাজ করে। জরিপের এই ফল বাংলাদেশের তিন হাজার কোটি ডলারের পোশাক তৈরি শিল্পের জন্য উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ ভয়ংকর নিরাপত্তা রেকর্ডের পরও বিশ্বের বৃহত্তম পোশাক শিল্পসমৃদ্ধ দেশগুলোর একটি হলো বাংলাদেশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার একটি পোশাক কারখানার ব্যবস্থাপক ওডিআই গবেষকদের বলেন, ১১ থেকে ১৪ বছরের শিশুদের দিয়ে কাজ করানো উচিত নয়—বিষয়টি তিনি জানেন। তবে শিশুদের এই বেআইনি নিয়োগের জন্য তিনি দায়ী নন। তিনি স্বীকার করেন, তাদের বেশির ভাগ কর্মীরই পরিচয়পত্র নেই। ফলে তাদের বয়স যাচাইয়েরও সুযোগ নেই।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এ বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বা দেশটির প্রভাবশালী পোশাক উত্পাদনকারীদের থেকে তাত্ক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শ্রমিক নেতারা বলেন, কারখানাগুলোতে শিশুশ্রম দিন দিন বাড়ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এটা হচ্ছে বাংলাদেশে শিশুশ্রম ও শিক্ষা নিয়ে সর্ববৃহৎ গবেষণাগুলোর একটি। এতে দেখা গেছে, ঢাকার বস্তিগুলোর ১৪ বছর বয়সী শিশুদের অর্ধেকই শিশুশ্রমে নিয়োজিত।

প্রতিবেদনটির লেখকদের একজন মারিয়া কোট্রি বলেন, বেশির ভাগ শিশুই স্কুলে যেতে চায়। কিন্তু দারিদ্র্যই তাদের মা-বাবাকে বাধ্য করে শিশু সন্তানদের কাজে দিতে। যদিও তারা জানে, তা তাদের শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর।

গবেষণায় আরো বলা হয়, বাংলাদেশে ১০ বছর পর্যন্ত শিশুদের শিশুশ্রমের পরিমাণ বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। আর ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে শিশুশ্রমের পরিমাণ বড়েছে ছেলেদের ক্ষেত্রে ৩৬.১ শতাংশ এবং মেয়েদের মধ্যে ৩৪.৬ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে এসব শিশুরা চরম গ্লানিকর অভিজ্ঞতা অর্জন করে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!