• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

তিন বোনকে বিয়ে করে কঠিন পরীক্ষায় আবদুল হক


ফেনী প্রতিনিধি জুন ২৪, ২০২১, ০২:৫৪ পিএম
তিন বোনকে বিয়ে করে কঠিন পরীক্ষায় আবদুল হক

ছবি : সংগৃহীত

ফেনী : ফেনীর আবদুল হক চৌধুরী একে একে সবুরা খাতুন ও রাশেদা সর্বশেষ খাদিজাসহ তিন বোনকেই বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার বোনকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যু হলে আরেক বোনকে বিয়ে করেন। আর এভাবেই পর্যায়ক্রমে তিন বোনকে বিয়ে করেন আবদুল হক।

প্রতিটি বিয়েই তিনি করেছেন পারিবারিক সিদ্ধান্তে। এই বিয়েগুলোর পেছনে রয়েছে একটি বিয়োগান্তক অধ্যায়। একই সঙ্গে সন্তানদের ভালো রাখার নিরন্তর চেষ্টা। আবদুল হক চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ফেনীর সাউথ অফিসের ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। তিনি ফেনী সদর উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের গুনক গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুল হক চৌধুরী ১৯৯৫ সালে ১৪ ডিসেম্বর একই ইউনিয়নের বাদুরিয়া গ্রামের সেকানদার বাদশার বড় মেয়ে সবুরা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুই কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। প্রায় ১৯ বছর সংসার শেষে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সবুরা। কয়েক মাস পার হলে উভয় পরিবারের সম্মতিতে সবুরার ছোট বোন রাশেদাকে বিয়ে করেন তিনি।

এ সংসারে একটি কন্যাসন্তান হয়। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। ৬ বছর সংসার করার পর রাশেদাও অসুস্থ হয়ে মারা যান। এদিকে পরপর দুই স্ত্রীর মৃত্যুতে আবদুল হক চৌধুরী ও তার শ্বশুরের পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। দুই স্ত্রীকে হারিয়ে তিন এতিম মেয়ে নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটে আবদুল হকের। মা-খালার মৃত্যুতে শোকে কাতর মেয়েরা অবস্থান করে নানা বাড়িতে। অন্যদিকে স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক বনিবনা না হওয়ায় সংসার ভেঙে যায় আবদুল হক চৌধুরীর মেজ শ্যালিকা খাদিজার। একপর্যায়ে উভয় পরিবারের সম্মতিতে এতিম মেয়েদের কথা চিন্তা করে খাদিজাকে বিয়ে করতে সম্মত হন আবদুল হক। সে অনুযায়ী গত মাসে সামাজিকভাবে তাদের দু'জনের বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন হয়।

আবদুল হকের শ্যালক ইলিয়াস সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হক ভাই ভালো মানুষ। একে একে দুই স্ত্রী মারা যাওয়ার পরও মানবিক কারণে তার কাছে আমার তৃতীয় বোনকে বিয়ে দেয়া হয়েছে।

আবদুল হক চৌধুরী বলেন, আল্লাহ আমাকে কঠিন থেকে কঠিনতম পরীক্ষা করছে। পরপর দুই স্ত্রীকে হারিয়ে এতিম মেয়েদের নিয়ে কঠিন সময় পার করছি। আল্লাহর রহমত, মা-বাবা ও এলাকাবাসীর দোয়ায় দুর্দিনে শ্বশুর পরিবারের লোকজন আমার পরিবারকে ঠাঁই দিয়েছেন।

বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসহাক খোকন বলেন, আবদুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যুর পর তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমেই সামাজিকভাবে তৃতীয় বোনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!