ঢাকা: মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের পদবি পরিবর্তনে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই সংবাদে সারা দেশের মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। ছয়টি শর্তে পদবি পরিবর্তনে সম্মতি দিয়ে ২১ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর পর থেকেই কর্মচারীদের মাঝে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। দেশের মাঠ প্রশাসনের একাধিক কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এ তথ্য।
সূত্র জানিয়েছে, এর আগে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের কর্মচারীদের পদের নাম পরিবর্তন করতে ১৬ মার্চ অর্থ বিভাগে চিঠি পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে ১৩তম গ্রেডের অফিস সুপারিনটেনডেন্ট, সিএ কাম উচ্চমান সহকারী ও সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটরের পদের নাম বদলে উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ১৪তম গ্রেডের প্রধান সহকারী, ট্রেজারি হিসাবরক্ষক, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর ও পরিসংখ্যান সহকারীর পদের নাম সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ১৫তম গ্রেডের উচ্চমান সহকারীর পদনাম উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা করার অনুরোধ করা হয়।
সেই চিঠির আলোকেই সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। ছয়টি শর্তের মধ্যে রয়েছে— বিদ্যমান নিয়োগবিধিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হবে, পদবি পরিবর্তনে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর অনুমোদন নিতে হবে, বেতন গ্রেড পরিবর্তন করা যাবে না, প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। এছাড়া, মোট পদসংখ্যার কম-বেশি হবে না।
সব আনুষ্ঠানিকতার পর পদবি পরিবর্তনের প্রজ্ঞাপনের চার কপি জারি করে পৃষ্ঠাঙ্কনের জন্য অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে বলেও সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে নমনীয় মনোভাব ব্যক্ত করে আন্দোলন থেকে সরে কাজে যোগ দিয়েছেন মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীরা।
সূত্র জানিয়েছে, এর আগে গত ১২ মার্চ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের দফতরে সংগঠনের কার্যালয়ে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোর নেতাদের বৈঠক হয়। তাতে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে তারা কাজে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, পদবি বদল ও বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ইউএনও এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের কর্মচারীরা টানা কর্মবিরতি পালন করছেন। এ জন্য নামজারি, জলমহাল, চলমান টেন্ডার কার্যক্রম, ইজারা মূল্য আদায়, অর্পিত সম্পত্তির লিজমানি আদায়, মিসকেস ও গণশুনানি সম্ভব হচ্ছিল না। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির মহাসচিব মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ‘বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসক স্যাররা আমাদের অভিভাবক। তাদের আশ্বাসের প্রতি আস্থা রাখতে হয়। তারা জানিয়েছেন, সরকারের উপরমহলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আমাদের দাবির প্রতি আন্তরিক। ইতোমধ্যেই আমাদের মূল দাবি পদবি পরিবর্তনের বিষয়ে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে আমরা খুশি।’
সূত্র জানিয়েছে, একইসঙ্গে কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে বিদ্যমান বেতন কাঠামোর ২০টি গ্রেডকে ১০টি গ্রেডে রূপান্তর এবং অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় ৪০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতার দাবিও তোলা হয়েছে। টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, আগের মতো শতভাগ পেনশন প্রদানসহ পেনশন গ্র্যাচুইটির হার এক টাকায় ৫০০ টাকা নির্ধারণের দাবিও তাদের। বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট মূল বেতনের ২০ শতাংশ করা এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ন্যায্যমূল্যে মানসম্মত রেশন প্রদানেরও দাবি করেছেন তারা। এসব দাবির বিষয়ে সরকার চিন্তাভাবনা করছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের দফতরে কর্মরত বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সভাপতি আকবর হোসেন জানিয়েছেন, পদনাম পরিবর্তনের পর পর্যায়ক্রমে বেতন গ্রেডও উন্নীত করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এমন আশ্বাসও আছে।
সোনালীনিউজ/এন







































