• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
মুখ খুললো খুনি

পর্ন দেখিয়ে মনিকাকে বার বার ধর্ষণ, অতঃপর খুন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক অক্টোবর ১২, ২০১৬, ০৮:৫১ পিএম
পর্ন দেখিয়ে মনিকাকে বার বার ধর্ষণ, অতঃপর খুন

ঢাকা: ভারতীয় সেন্ট প্রস্তুতকারী ব্যবসায়ী ও বিখ্যাত চিত্রগ্রাহক মনিকা ঘুর্দে খুনের চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। পুলিশের জেরার মুখে সবকিছু স্বীকার করেছে আটক নিরাপত্তাকর্মী রাজ কুমার।

সে জানিয়েছে, মনিকার প্রতি তার আসক্তি ছিল। অনেক দিন ধরেই তাকে অনুসরণ করতো। সানগোলদায় যে ফ্ল্যাটটি মনিকা কিনেছিলেন সেখানে আগে থেকেই লুকিয়ে ছিল রাজ কুমার। ঘটনার দিন (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যাবেলায় গোয়ার ক্যালাঙ্গুট সৈকতের অদূরে সাঙ্গোলদায় নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকছিলেন মনিকা। এ সময় বাইরে লুকিয়ে ছিল রাজ কুমার। মনিকা ফ্ল্যাটে ঢোকার পরই দরজায় এসে খটখটায় সে। 
নিজেকে সিকিউরিটি সুপারভাইজার বলে পরিচয় দিলে মনিকা দরজা খুলে দেয়। এরপর রাজ কুমার জোর করেই মনিকার ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে।

রাজ কুমার পুলিশকে জানায়, ঘরের ভেতরে মনিকার গলায় ছুরি ধরে জবরদস্তি করার চেষ্টা করে। মনিকা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার সঙ্গে পেরে উঠেননি। ধস্তাধস্তির মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মনিকা। তখন তাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে হাত-পা কষে বেঁধে ফেলেন নিরাপত্তাকর্মী রাজ কুমার।

ঘটনা এখানেই শেষ হয় না। পুলিশকে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে রাজ কুমার। সে জানায়, জ্ঞান ফিরলে মনিকাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে সে। এর আগে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় রাজ কুমার। সেই ফোন থেকেই মনিকাকে পর্ন ক্লিপিং দেখায়। তারপর থেমে থেমে বেশ কয়েক বার ধর্ষণ করে তাকে। শেষে মনিকাকে গলাটিপে, বালিশচাপা দিয়ে খুন করে। আর পুরো ঘটনাটাই সে খুব ঠাণ্ডা মাথায় করেছে বলে পুলিশকে জানায়।

ঘটনাটা গত ৫ অক্টোবর রাতের। পরদিন ৬ অক্টোবর সাঙ্গোলদার ওই ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে মনিকার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ গণমাধ্যমে জানায়, মনিকা তার সব টাকা-পয়সা, গয়নাগাটি দিয়ে দিতে চেয়েছিল রাজ কুমারকে। কিন্তু তাতে সে রাজি হয়নি। সে সময় মনিকা নানা অনুনয় বিনয় করলেও রাজের মন গলেনি। এরপর সে মনিকার এটিএম কার্ড, পিন নম্বর এমনকী মোবাইলও নিয়ে নেয়। আর সেই মোবাইল থেকেই মনিকাকে পর্ন ক্লিপিং দেখায়। এরপর তার হাত-পায়ের বাঁধন খুলে ধর্ষণ করে।

এদিকে, মনিকার দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযুক্ত রাজ কুমারের হদিস পায়। পুলিশের ধারনা ছিল, ডাকাতি করতে এসে মনিকাকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। কিন্তু মনিকার এটিএম কার্ড ব্যবহার করে বেশ কিছু জিনিস কেনে ওই নিরাপত্তাকর্মী। সেই সূত্র ধরেই তার সন্ধানে নামে পুলিশ। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে। 

কেন এমন করলো রাজ কুমার? প্রতিহিংসা আর লালসার বশেই এই কাজ করেছে রাজ কুমার। মনিকা তাকে আগে থেকেই চিনতেন। হরিয়ানা থেকে বি কম প্রথম বর্ষ শেষ করার পর এপ্রিলে গোয়ায় চলে আসে রাজ কুমার। সেখানে একটা নিরাপত্তা সংস্থার অধীনে কাজ নেয়। যে আবাসনে রাজ কুমার নিরাপত্তা কর্মীর কাজ করত সেই আবাসনেই একদিন ফ্ল্যাটের খোঁজ করতে আসেন মনিকা। আবাসনের গেটে রাজ কুমারের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। কোন কোন ফ্ল্যাট ফাঁকা আছে সেই খবরও মনিকাকে দেয় রাজ কুমার। কিছু দিন পর থেকেই সেখানে একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন মনিকা। 

পুলিশের কাছে রাজ কুমার স্বীকার করেছে, প্রথম দিন দেখার পরেই মনিকার প্রতি তার আসক্তি তৈরি হয়। তার উপর নজর রাখা শুরু করে সে। মনিকা যে একাই ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন সেটা জানতে পারে রাজু। বিষয়টি বুঝতে পারেন মনিকা। এ কারণে গত ২২ জুলাই মনিকা-সহ আবাসনের কয়েক জন বাসিন্দার অভিযোগের ভিত্তিতে চাকরিচ্যুত হয় রাজ। অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য মনিকার উপর চাপও দেয় রাজ কুমার। কাজ হারিয়ে ক্ষোভে-হতাশায় প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে রাজ কুমার। আর সহজ শিকার বানায় মনিকাকে।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!