• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

কুমিল্লায় ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ​​​​​​​


কুমিল্লা প্রতিনিধি জুন ২৪, ২০২৪, ১২:০২ পিএম
কুমিল্লায় ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ​​​​​​​

ছবি : প্রতিনিধি

কুমিল্লা: কুমিল্লায় ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার মিম আকতার (১৫) নামে এক কিশোরীর মৃত্যু হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৪ জুন) কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসে এই ঘটনা ঘটে। 

নিহত মীম ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কংশনগর এলাকার বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। 

পরিবারসূত্রে জানা যায়, কোরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে গলায় টনসিলের ব্যথা নিয়ে মিম তার মায়ের সঙ্গে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো. জহিরুল হকের কাছে যায়। তারপর চিকিৎসক জহিরুল হকের পরামর্শে গলার কিছু পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেখালে তিনি অপারেশনের কথা বলেন।

সেই অনুযায়ী রোববার (২৩ জুন) বিকেলে মিম তার মা লিপি আক্তারের সঙ্গে টনসিল অপারেশনের জন্য কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো. জহিরুল হকের কাছে আসে। তারপর অপারেশনের খরচ বাবদ ১৪ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায় ওই চিকিৎসক।

সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটায় চিকিৎসক জহিরুল অপারেশনের জন্য মিমকে একই এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অপর পাশে অবস্থিত হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার পরপরই মিমের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে চলে যায়। ১০ মিনিট পর চিকিৎসক জহিরুল বের হয়ে স্বজনদের বলে মিম হার্ট অ্যাটাক করেছে। তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিতে হবে। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় মিম।

নিহতের চাচাত ভাই শ্রাবণ ইসলাম বলেন, ওটিতে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বলে আপনাদের মেয়ের অবস্থা ভালো না, তাকে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে তারা নিজ খরচে আমাদেরকে মেডিকেলে পাঠাইছে। সেখানে গিয়ে আমাদেরকে ডা. জহির ১৫ হাজার টাকা দিয়ে বলে বাড়িতে চলে যান আপনারা। প্রয়োজনে আরো টাকা দিবে বলেও জানায় ডা. জহির। ইনজেকশন ভুল দেয়ার কারণেই আমার বোন মারা গেছে। 

মিমের মা লিপি আক্তার বলেন, আমার মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। গলায় ছোট একটা টনসিল হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে জহির ডাক্তার বের হয়ে বলে আমার মেয়ে হার্ট অ্যাটাক করেছে। তারপর তারাই আমার মেয়েকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এর আগে পথে আমার মেয়ে মারা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। সরকারের কাছে, প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

মিমের বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পর জহির ডাক্তার আমারে অপারেশনের টাকা ফেরত দিতে চান। আমাকে বলছে আমরা যত টাকা চাই উনি আমাদের টাকা দেবেন। টাকা দিয়ে আমার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাচ্ছেন। আমরা রাজি না হওয়ায় জহির ডাক্তার আমার মেয়ের পরীক্ষার রিপোর্টসহ যাবতীয় কাগজ নিয়ে হাসপাতাল তালা মেরে পালিয়ে গেছেন। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা থানায় অভিযোগ করবো। সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগ করবো।

ঘটনার কিছু সময় পরই ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টার এবং হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তারা হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসক জহিরুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এই ঘটনা পর ৯৯৯ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। নিহত মিমের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।

এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ নাছিমা আকতারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নি।

এসআই

Wordbridge School
Link copied!