ঢাকা: দেশের কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের একাংশের ক্ষমতার অপব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির মতে, তাদের এমন আচরণ কর্তৃত্ববাদের পতনে সৃষ্ট নতুন বন্দোবস্তের জন্য অশনি সংকেত।
রোববার টিআইবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদ পতনের পরিপ্রেক্ষিতে গত এক বছরে সবচেয়ে প্রভাবশালী বলে বিবেচিত রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের একাংশের কার্যক্রম আগের আমলের সরকারি দলের বহুমুখী ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বার্থসিদ্ধিমূলক অসুস্থ চর্চার প্রতিচ্ছবি।
তিনি বলেন, কর্তৃত্ববাদের পতনের পর থেকেই দেশব্যাপী বহুমাত্রিক দলবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট, মামলা বাণিজ্য, গ্রেপ্তার বাণিজ্য, জামিন বাণিজ্য, ট্যাগ বাণিজ্য ও দলীয় আধিপত্য কেন্দ্রিক সহিংসতা শুরু হয়েছে। যা ‘নতুন বাংলাদেশে’ বা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য অশনি সংকেত।
এতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা, নৈতিকতা ও জবাবদিহিমূলক চর্চা প্রতিষ্ঠায় করণীয় নিয়ে আত্মজিজ্ঞাসার এখনই সময়।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মুখে সংস্কারের কথা বললেও আধিপত্য, দখল ও চাঁদাবাজির সংস্কৃতি অব্যাহত থাকায় ‘নতুন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার জনআকাঙ্ক্ষা পদদলিত হচ্ছে। কর্তৃত্ববাদের পতনে মৌলিক পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হলেও ‘এবার আমাদের পালা’ এমন মানসিকতা সুস্থ রাজনৈতিক বিকাশের সম্ভাবনার পথে আত্মঘাতী প্রতিরোধ সৃষ্টি করছে।
নির্বাহী পরিচালক বলেন, ক্ষমতা-প্রত্যাশী ও প্রভাবশালী দলগুলোর নেতাকর্মীদের একাংশের সরাসরি এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পারস্পরিক যোগসাজশমূলক সম্পৃক্ততায় দুর্বৃত্তায়িত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আবারও স্বাভাবিকতায় পরিণত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পতিত রাজনৈতিক শক্তিও যুক্ত থাকছে। প্রথাগত দলবাজি, দখলবাজি ও পদ বাণিজ্যের কারণে সহিংস দলীয় কোন্দল স্থানীয় পর্যায়ে হরতাল ঘোষণার মতো বিরল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে দেখা গেছে।
টিআইবির ভাষ্যমতে, দাবি আদায়ে বলপ্রয়োগের পাশাপাশি কোনো কোনো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও বিচ্ছিন্নভাবে অতিক্ষমতায়িত শক্তির সম্পৃক্ততায় তথাকথিত ‘মবতন্ত্রের’ মুখোশে সংখ্যালঘু, জেন্ডারভিত্তিক, আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার হরণ, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়াসের বিরুদ্ধে বীভৎস আঘাত, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের ওপর নির্মম আক্রমণের অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে হয়েছে দেশবাসীকে।
সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের একাংশের দায়িত্বহীনতা, স্বার্থসিদ্ধির জন্য উঠেপড়ে লাগা, অভ্যন্তরীণ জবাবদিহি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উদ্বেগজনক ঘাটতির কথা উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যদিও সংশ্লিষ্ট দলগুলোর উচ্চপর্যায় থেকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাবধান করা থেকে শুরু করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাংগঠনিক পদক্ষেপও গৃহীত হচ্ছে। কিন্তু এসবের কার্যকর প্রতিকারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসন বরাবরের মতো ব্যর্থতার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে সহায়কের ভূমিকা পালন করছে। আবার রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রতিরোধ ও সংশোধনমূলক কৌশল গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না।
এআর







































