ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর কলাবাগানে গৃহবধূ তাসলিমা বেগমকে হত্যার পর হাত–পা বেঁধে চাদরে মুড়িয়ে মাছ–মাংস দিয়ে ঢেকে ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন স্বামী নজরুল ইসলাম। পরে সন্তানদের ফুপুর বাসায় পাঠিয়ে আত্মগোপন করেন তিনি। স্বজনদের অভিযোগ, বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া সম্পত্তি নজরুলের নামে লিখে না দেওয়ায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
গত সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কলাবাগান প্রথম লেনের ২৪ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাসলিমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের ভাই নাঈম হোসেন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
হত্যার দুই দিন পর মঙ্গলবার রাতে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে বুধবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
নিহতের পরিবার জানায়, তাসলিমার কাছে বাবার বাড়ির ১০ কাঠা জমি লিখে দেওয়ার জন্য কয়েক দিন ধরে চাপ দিচ্ছিলেন নজরুল। এতে রাজি না হওয়ায় রবিবার রাতে তাসলিমাকে হত্যা করেন তিনি। এরপর হাত-পা বেঁধে চাদরে মুড়িয়ে ফ্রিজে লাশ রেখে ওপরে মাছ–মাংস ঢেকে দেন।
পরদিন সকালে মেয়েদের ঘুম থেকে তুলে নজরুল বলেন, ‘তোমাদের মা অন্য একজনের সঙ্গে চলে গেছে, আমি খুঁজতে যাচ্ছি।’ এরপর দুই মেয়েকে ফুপুর বাসায় পাঠিয়ে আত্মগোপন করেন তিনি।
সোমবার সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা কলাবাগান থানার সহায়তায় নজরুলের বাসায় গিয়ে দেখেন, ঘরের দেয়ালে রক্তের দাগ। ফ্রিজের নিচে জমাট রক্ত দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। পরে ফ্রিজ খুলে ভেতরে তাসলিমার লাশ পাওয়া যায়।
তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম জানান, ২০০৪ সালে বিয়ে হয় তাঁর বোনের। তিন মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন তাঁরা। নজরুল তাঁর স্ত্রীকে মোবাইল ব্যবহার করতে দিতেন না এবং মেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেন।
ফ্ল্যাটের নিরাপত্তারক্ষী বাবুল হাওলাদার বলেন, সোমবার সকাল ৮টার দিকে দুই মেয়েকে নিয়ে গাড়িতে করে বাসা থেকে বের হন নজরুল। এরপর আর ফিরে আসেননি। রোববার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে গাড়ি নিয়ে বাসায় ঢুকতে দেখা যায়।
কলাবাগান থানার ওসি ফজলে আশিক বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নজরুল তাঁর স্ত্রী পরকীয়া করছেন বলে সন্দেহ করতেন, এ নিয়েই ঝগড়া লেগেই থাকত।
ওসি জানান, নজরুল কোনো চাকরি করতেন না। ব্যাংকে কিছু টাকা রেখে তার সুদে সংসার চালাতেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
এসএইচ







































