• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নায়ক এসআই আকবর এখন ভিলেন


সিলেট ব্যুরো অক্টোবর ১৪, ২০২০, ১২:০৪ পিএম
নায়ক এসআই আকবর এখন ভিলেন

সিটেল : সিলেট নগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া। সুদর্শন তার চেহারা। দেখতেও সিনেমার নায়কের মতো। পুলিশের চাকরি করলেও বাস্তবের নায়ক তিনি।

সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত নাটকে নায়কের অভিনয় করতেন তিনি। ইউটিউব চ্যানেলে সিলেটি ভাষায় নাটক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান গ্রিন বাংলার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। বেশ কয়েকটি নাটকে তিনি পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অভিনয়ও করেছেন। ‘গেইমওভার’ ও ‘গরীবের দেব’ নামে নাটক করে পরিচিতিও পেয়েছেন বেশ।

কিন্তু পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান উদ্দিন (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ভিলেন (খলনায়ক) বনে গেছেন এসআই আকবর। সিলেট তথা দেশের মানুষের কাছে এখন তিনি ‘রায়হানের হত্যাকারী’ হিসেবে পরিচিত। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করে তার শাস্তির দাবিতে সরব সিলেটের মানুষ।

গত ১১ অক্টোবর রোববার ভোরে রায়হান উদ্দিন নিহত হন। পুলিশের দাবি, ছিনতাইয়ের দায়ে নগরীর কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে তিনি নিহত হন। অপরদিকে, রায়হানের পরিবারের অভিযোগ, কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে নিহত হন রায়হান।

এজাহারেও এমন অভিযোগ তুলে ধরে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত রায়হান উদ্দিনের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলার এজাহারে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ আনলেও কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি।

নিহতের সৎ বাবা হাবিবুল্লাহ চৌধুরীও এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া ফাঁড়িতে উপস্থিত ছিলেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি দেখে শনাক্ত করেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় রায়হানের বাড়িতে যান সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করেন হাবিবুল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘সকালে ফাঁড়িতে যাওয়ার পর এক পুলিশ সদস্য আমার কাছে ১০ হাজার টাকা চান। এ সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন এসআই আকবর। তখন তিনি সাদা পোশাকে ছিলেন ও মুখে মাস্ক পরা ছিল। তিনি আমাকে বলেন, রায়হান অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ। অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) শাহরীয়ার আল মামুনকে প্রধান করে এসএমপির কোতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার নির্মল চক্রবর্তী ও বিমানবন্দর থানার সহকারী কমিশনার প্রবাস কুমার সিংহকে কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়। তাদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এসআই আকবরসহ চার পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, ‘পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগে তদন্ত কমিটির সুপারিশে এসআই আকবরসহ চার পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের পুলিশ লাইনে যুক্ত করা হয়েছে।’

রায়হান উদ্দিন সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার তিন মাস বয়সি এক মেয়ে রয়েছে। নগরীর রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!