ঢাকা : অপ্রাপ্তা বয়স্ক ত্রীভূজ প্রেমের বলি জেসিকা মাহমুদ ওরফে জেসি। প্রেমিক ও তার স্ত্রীর হাতে মৃত্যু হয় জেসিকার। এই হত্যার প্রধান আসমী বিজয় রহমানকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানা গেছে।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) কারওয়ানাবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাহীনিটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন|।
এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় র্যাব ছায়া তদন্ত করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে প্রধান আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তদন্ত করতে গিয়ে র্যাব জেনেছে, বিজয় হত্যার ঘটনার পর চারদিন সিরাজদিখানে এক বন্ধুর বাসায় ছিলো। এরপর ২২ দিন ছিলো ফরিদপুরের এক মাজারে। সেখানে ছদ্দ বেশে ছিলো।
গত এক তারিখে ওয়ারিতে বন্ধুর বাসায় আসে বিজয়। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২২ সালে তিনি এসএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। ফলাফলের অপেক্ষায় আছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ২০১৯ সালে একই স্কুলে পড়ুয়া আদিবা আক্তারের সঙ্গে প্রেম হয়। প্রেম চলাকালিন সময়ে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে জেসিকার সঙ্গেও একটি সম্পর্কে আবদ্ধ হয় বিজয়।
এই অবস্থায় ফেব্রুয়ারিতে আদিবা আক্তার ও বিজয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। জেসিকা যখন জানতে পারে বিয়ের ঘটনা তখন বিজয়ের ও আদিবার সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। জেসিকা বিভিন্ন কথপোকথনের স্ক্রীণ শট আদিবাকে পাঠায়। এই ঘটনায় আদিবার সঙ্গেও সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।
এই অবস্থায় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আদিবা ও বিজয়ের মধ্যে একটা সমঝোতা হয়। তারা ঠিক করে সমস্যার সমাধান করবে। আর ভিকটিমকে উচিৎ শিক্ষা দিবে এই বিষয়ে একমত হন।
র্যাব জানায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারির এক তারিখে গ্রেপ্তার বিজয় ও আদিবা পরিকল্পনা করেন জেসিকে উচিৎ শিক্ষা দিবে। আদিবা আক্তার ৩ জানুয়ারি জেসিকার বাসায় গিয়ে তাকে ডেকে আনে। জেসিকাকে বলা হয় তাদের মধ্যে চলমান ঝামেলার মিমাংশা করবে।
জেসিকার সঙ্গে বিজয়ের বাগবিতণ্ডা হয়। ঝগড়া চলা কালে আদিবা ও বিজয় জেসিকাকে গলা চেপে ধরে। এসময় শ্বাস রোধ হয়ে সেখানেই অঞ্জান হয়ে যান। এই ঘটনাকে নাটক সাজানোর জন্য জেসিকার দেহ দুজনে মিলে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যায়।
রাস্তার পাশে ফেলে রাখে জেসিকার দেহ। কিছুক্ষণ পর বিজযের চাচা জেসিকার দেহ দেখে চিকৎকার করে উঠে। বিজয় ও আদিবা ছাড়াও আশপাশের সবাই চলে আসে। জেসিকার দেহ নিয়ে বিজয় ও আদিবা মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালে যায়। এসময় জেসিকার ভাইকে বিজয় ফোন করে বলে জেসিকার অবস্থা ভালো না। তাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানায় চিকিৎসক। এরপর মামলা করে জেসিকার ভাই। এরই মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় আদিবা ও বিজয়।
গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জ শহরের কোটগাঁও এলাকায় প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে স্কুলছাত্রী জেসি মাহমুদকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে আহত করে বন্ধু বিজয় রহমান ও তার প্রেমিকা আবিদা। পরে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা সাজানো হয়।
পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় জেসির। এ ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আবিদা আক্তারকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তিনি। তবে ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন বিজয় রহমান।
সোনালীনিউজ/এমটিআই







































