• ঢাকা
  • শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

‘বাংলাদেশের অর্জন ও সম্ভাবনা তুলে না ধরায় বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি’


নিজস্ব প্রতিনিধি জুলাই ২৯, ২০২১, ১০:৩৮ এএম
‘বাংলাদেশের অর্জন ও সম্ভাবনা তুলে না ধরায় বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি’

প্রতিনিধি

ঢাকা: বাংলাদেশের অর্থনীতির অর্জন ও বিশাল সম্ভাবনা বিদেশে তুলে ধরা হয়নি, যে কারণে বিনিয়োগ আসেনি বলে জানিয়েছেন বাংলাদশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

যুক্তরাষ্টের রাজধানী ওয়াশিংটনে বুধবার (২৮ জুলাই) বাংলাদশের অর্থনীতি বিষয়ক রােড শাের তৃতীয় সেশনে বক্তব্যের সময় তিনি এমনটাই জানান।  অনুষ্ঠিত রাড শাের মূল বিষয়-‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগারঃ পটেনশিয়ালস অব ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়ােগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, অর্থমন্ত্রনালয়ের ফাইন্যান্স ডিভিশনের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘােষ, বিনিয়ােগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মাে. সিরাজুল ইসলাম, রফতানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাে. নজরুল ইসলাম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন, শান্তা এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হােসাইন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, গত বছর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিভিন্নখাতে সফলতার অনেক গল্প রয়েছে। এই সফলতা দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী অবস্থানে চলে যাবে। আঞ্চলিক দেশ হিসেবে চীন ও ভারত এগিয়ে যাচ্ছে। এসব দেশগুলাের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কও বাড়ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়ােগ করায় সবচেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। অর্থনীতির সবগুলাে আমরা এগিয়েছি। সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করলে আগামী বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্ভাবনা বিশাল। আমাদের অর্থনীতি যা অর্জন ও সম্ভাবনা রয়েছে, উন্নত দেশগুলার বিনিয়াগকারীদের কাছে তা তুলে ধরা হয়নি। যে কারণে আমাদের ওইভাবে বিদেশি বিনিয়ােগ আসেনি। এ কারণে বিদশি বিনিয়ােগ আর্কষণের জন্য আমরা এ ধরনের রােড শাের উদ্যাগ নিয়েছি।

অনুষ্ঠানে মূল তিনটি বিষয় তুলে ধরা হয়। এগুলাে বাংলাদেশের অর্জন, সম্ভাবনা এবং সংস্কারের বিভিন্ন উদ্যােগ। এরমধ্যে রয়েছে, অবকাঠামাে উন্নয়ন, বিভিন্ন আইনের সংশাধন এবং বেসরকারিখাত বান্ধব পলিসি গ্রহন।

এসময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়ােগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, চতুর্থ ও পঞ্চম শিল্পখাত মাথায় রেখে ঢেল সাজানাে হচ্ছে। শিক্ষাখাত প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদর সঙ্গ যুক্ত হত যাচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি। এছাড়া স্বাস্থ্যখাতে মােট ওষুধের ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ বাংলাদশে উৎপাদিত হয়। শিল্পখাত বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।

তিনি বলেন, শিল্পখাতের সেবা গ্রাহকের দােড় গােড়ায় পৌছে গেছে। বাংলাদেশে বিনিয়ােগ করলে সবচেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। বিদশি বিনিয়ােগ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়ােগের অনেক সুযােগ সুবিধার কথা বিদেশিরা জানে না। তবে এ বিষয়গুলাে জানাতে সরকার এবং বিদেশি মিশনগুলাে কাজ করছে। আশা করছি, আগামীতে এটি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হবে।

প্রসঙ্গত বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্ভাবনা তুল ধরে বিদশি ও প্রবাসী বিনিয়ােগ আর্কষণে যুক্তরাষ্ট্রের ৪টি গুরুত্বপূর্ণ শহরে ১০দিনের রােড শোর আয়ােজন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে নিউইর্য়ক এবং ওয়াশিংটনে রােড শাে শেষ হয়েছে। আগামী ৩০ জুলাই লস এঞ্জলেস এবং ২ আগষ্ট সানফ্রানসিসকাে অনুষ্ঠিত হবে এই কর্মসূচী। শেয়ারবাজার নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর আয়োজন করেছে। অর্থনেতিকভাব বিশ্বে সবচেয়ে প্রভাবশালী এই দেশটিতে বাংলাদেশকে তুলে ধরে বিদশি বিনিয়ােগ আকর্ষণ এই আয়াজনের উদ্দশ্যো। বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়ােগ করে সে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানের প্রথম দিনই যুক্তরাষ্ট্রের কােম্পানি কেআইইউ গ্লােবাল লিমিটেড বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন মােবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস কােম্পানি নগদের ৩ কাটি ডলারের বন্ড কেনার চুক্তি করেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৬৫ কাটি টাকা।

মূলপ্রবন্ধে আরিফ খান বলেন, এশীয় অঞ্চলে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্য শীর্ষে বাংলাদেশ। বর্তমান বিদশি সহায়তা ছাড়াই আমাদের সক্ষমতা বাড়ছে। ১৯৭১ সাল আমাদের বিদেশি সহায়তার হার ছিল ৯৮ শতাংশ। আর ২০২১ সাল তা মাত্র ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সবজি উৎপাদন বিশ্বে চতুর্থ বহত্তম অবস্থান। ভৌগলিক দিক থেকেও আমাদের অবস্থান সুবিধাজনক।

তিনি বলেন, আমাদের সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানর শীর্ষ কর্মকর্তারা এখান এসেছেন। ওনাদের সবার কথার মূল বিষয় হল, অর্থনতিক উনয়ন সিরিয়াস সরকার। তিনি বলেন, আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাত এগিয়ে যাচ্ছে। যদিও আমাদের ব্যাংকিং খাত খেলাপি ঋণ বেশি। এসএমইখাতে খেলাািপ ঋণ মাত্র ৩ শতাংশ। কর্মসংস্থানের ৭০ শতাংশই এখাত। আগামী ৫ বছর শিল্পখাত নেতৃত্ব দেবে এসএমই। এ কারণে শেয়ারবাজারেও এসএসইর জন্য আলাদা বার্ড গঠন করা হয়ছ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাংকের পুর্বাভাস অনুসারে ২০৫০ সালে বিশ্বের ২৩তম অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ। সংস্থাটির তথ্য অনুসারে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্রুত বর্ধণশীল অর্থনীতির দেশ হলাে বাংলাদেশ। একই পুর্বাভাস দিয়েছে আরেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হংকং সাংহাই ব্যাংকিং কর্পােরেশন (এইচএসবিসি)। গত দশ বছর বাংলাদেশের মােট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবদ্ধি ৭ শতাংশ। আর মােট জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ৩১ শতাংশ। প্রবৃদ্ধিগত সাপাের্ট দিতে ২০২০ সালে বাংলাদেশের অবকাঠামােখাতে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়ােগ করা হয়েছে। ২০১১ সাল বাংলাদেশের মাথা পিছু আয় ছিল ৮৬০ মার্কিন ডলার। বর্তমান তা ২ হাজার ২২৭ ডলার উন্নীত হয়ছে। এছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৭ বিলিয়ন ডলার পৌছেছে। করানার মধ্যও ২০২০ সালে প্রবাসী আয়ে (রমিট্যান্স) ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!