• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘বাংলাদেশ ৪৫০ কোটি ডলার চায়, প্রথম দফায় ১৫০ কোটি’


নিউজ ডেস্ক আগস্ট ৯, ২০২২, ০৮:৫০ পিএম
‘বাংলাদেশ ৪৫০ কোটি ডলার চায়, প্রথম দফায় ১৫০ কোটি’

ঢাকা: বাজেট ঘাটতি পূরণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে মোট সাড়ে ৪ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণসহায়তা চায় বাংলাদেশ। 

যা দেশীয় মুদ্রায় ৪২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার মতো (প্রতি ডলার ৯৫ টাকা ধরে)। এই প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশ প্রথম কিস্তিতে সংস্থাটির কাছে ১৫০ কোটি ডলার চেয়েছে। এই অর্থ বাংলাদেশের প্রায় ১৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকার সমান। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এফটিডটকমকে (ফিন্যান্সিয়াল টাইমস) এসব কথা বলেন।

এদিকে আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশকে মোট কী পরিমাণ ঋণ দেওয়া হতে পারে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল জানান, বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সিসহ অন্যান্য বহুজাতিক ও দ্বিপক্ষীয় ঋণদাতাদের কাছ থেকেও ৪০০ কোটি ডলার চাইছে। দাতাদের কাছ থেকে এসব ঋণ পাওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদী বলে উল্লেখ করেন।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বাংলাদেশ সফর করে যাওয়ার পর অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বিদেশি ঋণ প্রসঙ্গে কথা বললেন। ওয়াং ই ১৭ ঘণ্টার এক সংক্ষিপ্ত সফরে গত শনিবার বিকেলে ঢাকা আসেন। পরদিন রোববার বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে এক বিবৃতিতে চীন নিজেকে ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অংশীদার’ বলে অভিহিত করেছে। সেই সঙ্গে বলেছে যে উভয় দেশ ‘অবকাঠামোতে সহযোগিতা’জোরদার করতে সম্মত হয়েছে।

অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতের পর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক উন্নয়নশীল দেশ চাপে পড়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু দেশ তাদের বিদেশি ঋণ পরিশোধের জন্য সংগ্রাম করে চলেছে।

সার্বভৌম ঋণে খেলাপি হওয়া শ্রীলঙ্কা এখন জরুরি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য ঋণ পেতে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা করছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ৭০০ কোটি ডলারের ঋণসহায়তা প্যাকেজের অংশ হিসেবে ১৩০ কোটি ডলারের তহবিল ছাড়ের বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে গত মাসে প্রাথমিক চুক্তি করেছে। পাকিস্তানের হাতে বর্তমানে যে পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে মাত্র দেড় মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে দেশটি।

ক্রমাগত জ্বালানি আমদানির বিল ও জ্বালানি ঘাটতি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং প্রতিদিন বেশ কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও আঘাত লেগেছে। এর ওপর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৪ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে গেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। 

যাহোক, বিশ্লেষকেরা বলছেন যে বাংলাদেশের শক্তিশালী রপ্তানি খাত, বিশেষ করে পোশাক বাণিজ্য সাম্প্রতিক বৈশ্বিক অভিঘাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের হাতে এখন যে পরিমাণ রিজার্ভ আছে, তা দিয়ে প্রায় পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই ভোগান্তিতে পড়েছে, আমরাও চাপের মধ্যে আছি।’ তবে শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে নেই। এমন পরিস্থিতির কথা ভাবারও জো নেই।’

সোনালীনিউজ/এআর

Wordbridge School
Link copied!