• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

মুদ্রানীতিতে ৪ মৌলিক পরিবর্তন, আইএমএফের পরামর্শের ছাপ!


নিজস্ব প্রতিবেদক  জুন ১৮, ২০২৩, ০৯:৫৪ পিএম
মুদ্রানীতিতে ৪ মৌলিক পরিবর্তন, আইএমএফের পরামর্শের ছাপ!

ঢাকা: মুদ্রানীতিতে চারটি বড় পরিবর্তন এনে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের জন্য সংকোচনমূলক নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সেখানে ঋণের সুদের হার, রিজার্ভ গণনার পদ্ধতি, মুদ্রা সরবরাহ নীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে।

রোববার (১৮ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আগামী ছয় মাসের জন্য এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

তিনি বলেন, ‘এবার মুদ্রানীতিতে চারটি বিষয় এনেছি। আগের মুদ্রানীতিগুলোর তুলনায় চারটি মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে।’

দেশের অর্থনীতিতে সংস্কার করার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) যেসব পরামর্শ দিয়েছে, তার অনেক ছাপ উঠে এসেছে এবারের মুদ্রানীতিতে।

জুলাই মাস থেকে এই নতুন মুদ্রানীতি কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এসব পদক্ষেপ নিয়েছে এমন এক সময়ে যখন বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি চরম আকার ধারণ করেছে। মে মাসে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ (৯.৯৪%)।

সাধারণত বাজারে টাকার সরবরাহ বাড়িয়ে বা কমিয়ে বাজারে টাকার যোগান নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এখন থেকে এরকম মুদ্রা সরবরাহ নীতির বদলে সুদহারভিত্তিক নীতি নেয়া হবে। অর্থাৎ সুদের হার বাড়িয়ে বা কমিয়ে বাজারে মুদ্রার যোগান নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

এতদিন ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুদের হার নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সাধারণত ৯ অথবা ১০ শতাংশের বেশি ব্যাংকগুলো সুদ নিতে পারতো না। এর সাথে মিল রেখে তাদের আমানত সংগ্রহ করতে হতো।

কিন্তু এখন থেকে ঋণে সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা আর থাকছে না। এখন থেকে ঋণের সুদের হার হবে বাজারভিত্তিক। তবে এজন্য একটি রেফারেন্স রেট থাকবে।

ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের লেনদেন রেটের গড়ের সাথে ৩ শতাংশ বাড়তি যোগ করে ব্যাংকগুলো আর ৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণের সুদহার নির্ধারণ করবে। বর্তমানে ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের গড় ৭ দশমিক ১০ শতাংশ।


২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে গত জানুয়ারি মাসে ভোক্তা ঋণে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ আর ক্রেডিট কার্ড ঋণের সুদের হার তুলে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

রিজার্ভ গণনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ রয়েছে, সেটার সাথে সাথে ঋণ হিসেবে দেয়া বা বিভিন্ন তহবিলে দেয়া রিজার্ভ গণনা করে প্রকাশ করতো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কিন্তু এভাবে গণনা না করে নেট রিজার্ভ বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব গণনা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল শর্ত দিয়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, এতদিন রিজার্ভ যে ফর্মুলায় করা হতো, সেটার পাশাপাশি আইএমএফ ম্যানুয়াল অনুযায়ীও করা হবে। দুটি পদ্ধতিই থাকবে এবং পাশাপাশি দেখানো হবে।

পলিসি রেট বা রেপো রেট আরো ০.৫ শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কম ঋণ নেবে, সরকার কম টাকা নেবে। সেইসাথে সরবরাহ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘নতুন এই মুদ্রানীতির ফলে বাজারে অতিরিক্ত মুদ্রা সরবরাহে রাশ টানা হবে। সেইসাথে বাজারে সরবরাহ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি অব্যাহত থাকবে। মূল্যস্ফীতি মোকাবেলাতেও এসব সিদ্ধান্ত কাজ করবে।’ সূত্র : বিবিসি

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!